জগন্নাথপুরে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই

13

মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে বন্যা পরিস্থির চরম অবনতি হয়েছে। বিগত ২০২২ সালের মতো ভয়াবহ না হলেও ছুঁইছুঁই অবস্থা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে উপজেলার অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।
ফলে সড়কে আগের মতো যানবাহন চলাচল করছে না। উপজেলার সর্বত্র শুধু পানি আর পানি। উপজেলা পরিষদ চত্বরেও পানি। পৌর শহরের পুরাতন সিলেটি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রধান সড়কে পানি। পৌর শহরের নলজুর নদীতে থাকা বিকল্প বেইলি সেতু কয়েক ফুট পানির তলিয়ে আছে। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারেও আছে পানি। পৌর সদরের সঙ্গে উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের মানুষের সড়ক যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
যানজটের পৌর শহরে নেই আগের সমাগম। বদলে গেছে আগের চিত্র। চারদিকে বাড়ছে হাহাকার। এতে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। বন্যায় বাড়ি ছাড়া মানুষেরা একটু আশ্রয়ের আশায় ছুটে চলেছেন এখান থেকে ওখানে। এছাড়া গবাদিপশু-গোখাদ্য ও ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যা দুর্গত মানুষজন। এখন মানুষের নৌকাই একমাত্র ভরসা।
যদিও জগন্নাথপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত মানুষদের রক্ষায় নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। খোলে দেয়া হয়েছে সকল আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এসে অবস্থান নিচ্ছেন বাড়ি ছাড়া পানিবন্দি মানুষ। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-বশিরুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে দুই হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও উঁচু এলাকার বাড়িঘর ও ভবনে আরো প্রায় কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নেন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে পানিবন্দি অসংখ্য মানুষ বলেন, এখনো পানি বাড়ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা বিরাজ করছে। তবে এতো কষ্টের মাঝেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে-পৌর শহরের মাহিমা রেস্টুরেন্টের মালিক মকবুল হোসেন ভ‚ইয়া নিজ প্রতিষ্ঠানের একাংশ পার্টি সেন্টারে দুর্গত মানুষদের আশ্রয় দিয়ে খাবার দিচ্ছেন। প্রতিদিন এভাবে দুর্গত মানুষের বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি জানান। এছাড়া সাবেক ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র শফিকুল হক জানান, জগন্নাথপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী এমএ কাদির এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষদের উন্নত খাবার প্রদান করা হয়েছে।