বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর
অযতেœ অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে ত্রাণ অফিসের রেসকিউ বোট টাঙ্গুয়া-১। কখনো শুকনো নদীতে কিংবা কখনো পানিতে নিমজ্জিত থাকার কারণে ব্যবহার অনোপযোগী হচ্ছে রেসকিউ বোট সেই সাথে নষ্ট হচ্ছে সরকারের অর্ধকোটি টাকার সম্পদ।
জানা যায়, দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হাওর ও উপকুলীয় জেলাগুলোর জন্য ৬০ টি রেসকিউ বোট তৈরী করে। প্রথম বছর ৮ টি বোট বিভিন্ন জেলায় হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তী বছর ২০২২ সালে আরও ৫২ টি বোট বিভিন্ন জেলা উপজেলায় হস্তান্তর করা হয়। সে বছর সুনামগঞ্জ জেলায় দুটি বোট হস্তান্তর করে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। একটি তাহিরপুর ও অপরটি সুনামগঞ্জ সদরে। সে বছরই তাহিরপুর সহ পুরো সিলেট জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। বন্যার সময় এ রেসকিউ বোট টি বিভিন্ন কাজে লাগে। সরকারি বেসরকারি ত্রান নিয়ে যাওয়া হয় বন্যার্ত ও বানবাসী মানুষদের পাশে।
২২ সালে বন্যা কমে যাওয়ার পর বোটটি শাহ আরেফিন অটো রাইসমিলের সামনে বৌলাই নদীতে নোঙ্গর থাকে কিছুদিন। এ বছরই সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে বোটটি নোঙ্গর করা হয় তাহিরপুর থানা পুলিশ স্টেশনের সামনে। শীত মৌসুমে বৌলাই নদী শুকিয়ে গেলে রেসকিউ বোটটি দীর্ঘ ৬ মাসের মত শুকনোতে পরে থাকে অরক্ষিতভাবে। সম্প্রতি অতি বৃষ্টিতে নদীতে ঢল এলে রেসকিউ বোটটি পানির নীচে পরে।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায় ৫৪ ফুট দীর্ঘ ও ১২.৫০ ফুট রেসকিউ বোটটির দীর্ঘ হুডটি ছিড়ে গেছে। ইঞ্জিন সহ মুল বডি অনেকটা পানির নীচে, শুকনো মাটিতে দীর্ঘদিন থাকার কারনে স্থানে স্থানে ঝং ধরেছে। নদীতে গোসল করতে এসে নেক শিশু কিশোররা ইচ্ছে মত বোটটি ব্যবহার করছে। এ অবস্থায় আর কিছুদিন থাকালে বোটটি আর কোন কাজেই আসেবনা এমনাই ধারনাই করছেন স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন।
তাহিরপুর বাজার ব্যবসায়ী মধ্য তাহিরপুর গ্রামের সমীরণ রায় বলেন, বাড়ি থেকে বাজারে আসতে রোজ এই রেসকিউ বোটটির দিকে চোখ পড়ে। হেমন্তে দেখলাম শুকনো নদীতে আর এখন বর্ষায় পানির নীচে। কি আর বলবো- সরকার ক্যা মাল দরিয়া ম্যা ঢাল এই আর কি। তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুনাব আলী বলেন, তাহিরপুর হাওরপ্রধান এলাকা। বর্ষাকালে বন্যার জন্য সব সময় প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হয়। ২০২২ সালে বন্যার সময় সুনামগঞ্জ-১ রেসকিউ বোটটি অনেক কাজে লেগেছে বানবাসী মানুষদের উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহিবুর রহমান বলেন, রেসকিউ বোটটি পানি থেকে উঠিয়ে দ্রæত রক্ষানবেক্ষনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
কুচিয়া মাছ ধরতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে লিটন সবর (৪০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। লিটন সুরমা চা বাগানের ১০ নং সেকশনের রবি সবরের ছেলে।
জানা গেছে, লিটন বিভিন্ন জলাশয় ও খালের পাড়ের গর্ত থেকে কুচিয়া মাছ ধরে তা বাজারে বিক্রী করে সংসার চালাতো। প্রতিদিনের মতো শনিবারও কুচিয়া ধরতে লিটন বুল্লা ইউনিয়নের গাগরাবাড়ি যায়। একটি খালের ধারে গর্ত থেকে টোপ ফেলে কুচিয়া ধরতে নামলে খালের পানিতে ছিঁড়ে পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে আসলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান তিনি। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রোখসানা পারভিন জানান, লিটনকে মৃত অবস্থায় জরুরী বিভাগে আনা হয়।
লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতকারী মাধবপুর থানার উপপরিদর্শক আবু রায়হান জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ায় পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।