তীব্র গরমে সিলেটের জনজীবন ওষ্ঠাগত

22

 

সিন্টু রঞ্জন চন্দ
গত কয়েক দিনের মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রায় প্রাণ ওষ্ঠাগত সিলেটের জনজীবনে। কোথাও একটু প্রশান্তি নেই। ঘর, অফিস, দোকান বাজার সবখানেই গরম আর গরম। তবে যাদের এসির নিচে বসার বা শুয়ার সুযোগ রয়েছে তারা কিছুটা হলেও বাড়তি প্রশান্তি পাচ্ছেন। কাঠফাঁটা রোদে সবচেয়ে বেশী কষ্টে আছেন খেটেখাওয়া শ্রমজীবী মানুষ যারা দিন আনে দিন খান। কাজের ফাঁকে একটু ছায়া পেলে জিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
প্রচন্ড এই গরমে কোমল পানীয়সহ নানা ধরণের শরবতের বিক্রি যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে গরম জনিত নানা রোগ ভালাই। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বর, মাথা ব্যথা, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে এবং সেই সাথে হচ্ছে হিট স্ট্রোক। ডাক্তাররা পরামর্শ দিচ্ছেন প্রচন্ড এই গরমে যথাসম্ভব ছাতা ও ক্যাপ ব্যবহার করার পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি পান করার। প্রচন্ড গরম থেকে গিয়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল না করার পরামর্শও ডাক্তারদের।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সিলেটে এবছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে গতকাল বৃহস্পতিবার আবারও সেই রেকর্ড অতিক্রম করে তাপমাত্রা দাড়ায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সিলেটে গত ২ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। মাঝখানে সোমবার বৃষ্টি হলেও কমেনি তাপমাত্রা। আবারও বেড়ে যায় তাপমাত্রার পারদ। এই গরমের সঙ্গে যেন নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছেন না সিলেটবাসী। বিঘœ হচ্ছে দৈনন্দিন কাজ। অনেকেই জরুরি কাজ না থাকলে বাইরে বের হচ্ছেন না।
আবার যাদের বাইরে না বেরিয়ে উপায় নেই, তাদের এই অসহ্য গরমকে উপেক্ষা করেও কাজ করতে হচ্ছে। গরমের সঙ্গে লোডশেডিংও যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। অসহনীয় গরমে বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না।
কথা হয় নগরীর বন্দরবাজারের এক ভ্যানচালকের সাথে। তিনি বলেন, গরমে আমাদের মতো গরীবদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। ঘরে বসে থাকলে চুলায় আগুন জ্বলবে না। তিনি বলেন, যদি বের না হই তাহলে খাওয়াবে কে? তার ঘরে ফ্যানও নেই জানিয়ে ওই ভ্যানচালক বলেন, গরমের জন্য পুরো রাতই ঘুম হয়না। তার উপর থাকি বস্তিতে। গিঞ্জি পরিবেশে কি করে যে আছি একমাত্র আমরাই জানি।
সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশে সাধারণত মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুনে গরম বেশি থাকে। তবে এই সময়ে গরম কিছুটা কমে বৃষ্টি হলে। আগামী কয়েক দিন এ রকম গরম অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।