বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর
এক সময় তাহিরপুরে গরু-মহিষের গাড়ির প্রচলন ছিলো চোখে পরার মত। এখন আর গরু-মহিষের গাড়ি তেমন চোখে পরে না। হাওরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ধানের আটি চারা জমিতে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে চৈত্র-বৈশাখ মাসে হাওর থেকে কাটা ধানের আঠি মাড়াই খলায় নিয়ে আসা, মাড়াই খলা থেকে ধান, খরখুটু বাড়িতে নিয়ে যাওয়া সহ নানা কাজে গরু- মহিষের গাড়ি ব্যবহার হতো। গরু মহিষের গাড়ির চাকা গুলো তৈরী কারা হতো কাট দিয়ে। বাশ দিয়ে তৈরী করা হতো মুল বডি। এখন গরু-মহিষের গাড়ির স্থান দখল করেছে, ট্রাফে ট্রাক্টর, পিকআপ, লেগুনা। আধুনিকায়নের এত কিছুর পরও সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার ভাটি তাহিরপুর, গোবিন্দশ্রী, শ্রীপুর, রামজীবনপুর, পাঠাবুকা সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে এখনো কিছু মহিষের গাড়ি চোখে পরে। হয়তো কিছু দিন পর আর এগুলোও চোখে পরবে না। ভবিষ্যত প্রজন্ম হয়তো ছবিতেই দেখবে আর গল্প শুনবে গরু-মহিষের গাড়ি।
উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক নুরুজ্জামন বলেন, আধুনিকতার এ যুগে গরু- মহিষের গাড়ি নেই বললেই চলে। এক সময় আমাদের বাড়িতেও গরুর গাড়ি ছিলো। গরুর গাড়ি কৃষি কাজে বেশি ব্যাবহার করতাম। বছর দশেক হলো গরুর গাড়ির আর প্রয়োজন পড়ছেনা। এখন মাহেন্দ্র, ট্রলি, কিংবা লেগুনা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সেওে নিচ্ছি।
শ্রীপুর দক্ষিন ইউনিয়ন শ্রীপুর গ্রামের কৃষক শাহীন মিয়া বলেন, হাওরে জাঙ্গালগুলো (সড়কপথ) জমি রোপনের সময় এবং ধান কাটার সময় কাদা মাটির কারনে চলাচলের অনুপযোগী থাকে। তখন হাওর থেকে ঠেলা বা ট্রলি দিয়ে ধান পরিবহন করতে সমস্যা হয়। সমস্যার কারনে আমাদের গ্রামে এখনো মহিষের গাড়ির ব্যাবহার রয়েছে।
শ্রীপুর দক্ষিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী আহমদ মুরাদ বলেন, আধুনিকতার ছোয়ার মধ্যেও এখনো শ্রীপুর দক্ষিন ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে কৃষি কাজে মহিষের গাড়ির প্রচলন রয়েছে। বিশেষ করে বোরো ধান রোপন মৌসুম ও বোরো ধান কাটা মাড়াইর সময় হাওর থেকে ধান পরিবহন করতে দেখা যায় গাড়ি গুলো দিয়ে।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান উদ দৌলা বলেন, এক সময় অনেক অঞ্চলের লোকজন বিভিন্ন কাজে গরু-মহিষের গাড়ি ব্যবহার করতেন। বর্তমানে তা নেই বললেই চলে। তবে এখনো কিছু কিছু জায়গায় গরু মহিষের গাড়ির ব্যবাহার রয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা শ্রীপুর দক্ষিন এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে এখনো কৃষিকাজে মহিষের গাড়ি ব্যাবহার করছেন কৃষকেরা।