শাহ্ মাশুক নাঈম, দোয়ারাবাজার থেকে
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার চকবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের ভেতর দিয়ে গেছে রাস্তা। রাস্তাটি দিয়ে প্রতিনিয়ত দ্রæত গতিতে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। ফলে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ক্লাসের সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
পাকা রাস্তার দুই পাশে রয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের শ্রেণিকক্ষ। স্কুলের খেলার মাঠটির মধ্য দিয়ে পাকা সড়ক থাকায় শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় সেখানেই খেলায় মেতে ওঠে। এতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের এই চকবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে দুই শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয় সৃষ্টির অনেক পরে চকবাজার টু নোয়াগাও যাতায়াতের রাস্তাটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়েছে। সে সময় সমস্যার বিষয়টি খেয়াল করা হয়নি। এরপর থেকে ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় সেখানেই খেলায় মেতে উঠছে। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মোরাদ হোসেন বলে, ‘সব সময় রাস্তায় গাড়ি চলে। তাই পারাপারে ভয় লাগে। কষ্ট করে পার হই।’ বৃষ্টি আক্তার চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ও বলে, ‘আমাদের স্কুলে মাঠ নাই। রাস্তায় গাড়ি চলে তাই ক্লাস থেকে বের হতে পারি না।’
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা বেগম জানান, ১৯৮৯ সালে স্কুলটি এলাকাবাসীর সহায়তায় গড়ে ওঠে। কিন্তু রাস্তাটি এর অনেক পরে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ হয়েছে। সে সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ রাস্তা নির্মাণে কোনো বাধা দেয়নি। শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এখন এই রাস্তাটি স্কুলের একটি বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কুলের বাড়তি কোনো জায়গাও নেই। টিফিন ও ছুটির সময় এই রাস্তার উপরই তারা ছোটাছুটি করে। তাদের সহজে ধরে রাখা যায় না।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন দূর্জয় জানান, দুই পাশে স্কুলের ভবন রেখে মাঝ দিয়ে পাকা সড়ক নির্মাণ করাটা মোটেও ঠিক হয়নি। শিশুরা সময় পেলেই রাস্তাটির উপর খেলায় মেতে ওঠে। তা ছাড়া স্কুলের দুই পাশেই ভবন থাকার কারণে শিশুদের শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার সময়ও রাস্তা পার হয়ে যেতে হয়। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই তারা শিশুদের নিরাপত্তায় স্কুল ভবনের পেছন দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরি ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আল তানভীর আশরাফী চৌধুরী বাবু জানান, বিদ্যালয়টি আমি পরিদর্শন করেছি বিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে সড়ক থাকায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়দের বলে দিয়েছি এলাকাবাসী যদি বিদ্যালয়ের পেছন দিকে যে জায়গা রয়েছে সেটি দেয় তাহলে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করা হবে।