শাহ্ মাশুক নাঈম, দোয়ারাবাজার
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পর প্রথম সিজারিয়ান অপারেশন সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার দুপুরে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরাটিলা গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী রুমা আক্তারের প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয়। এতে ওই প্রসূতি এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে মা ও নবজাতক উভয়েই সুস্থ আছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু সালেহীন খান বলেন, হাসপাতালে এ প্রথম অস্ত্রোপচার হয়েছে। মা ও নবজাতক সুস্থ আছে।
জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠিত হয়, ১৯৯৯ সালে ৩১ শয্যা চালু হয়। বর্তমানে ২০২৩ সালে ৫০শয্যা বিশিষ্ট ভবন উদ্বোধন হলেও ৩১শয্যার জনবল দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে প্রসূতি স্বাস্থ্য সেবায় জনবল সংকট থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন চালু ছিল না।
গাইনি ডাক্তার থাকলেও অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ থাকে না। আবার অ্যানেস্থেসিয়া থাকলে গাইনি ডাক্তার থাকতো না। সমন্বয়ের অভাবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এতদিনে অপারেশন থিয়েটার অচল পড়েছিল। সম্প্রতি এ সংকট সমাধান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারেশন থিয়েটারটি চালু করে। সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জনের বিশেষ নির্দেশে এই অপারেশন করেছেন ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কনসালটেন্ট (গাইনী) ডাঃ ফাতেমা তোজ জোহরা, এনেস্থেসিয়া কনসালটেন্ট ডাঃ মাহফুজা রহমান চৌধুরী, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন। সার্বিক তত্ত¡াবধানে ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ আবু সালেহীন খান। উপস্থিত ছিলেন ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কনসালটেন্ট এনেস্থেসিয়া ডাঃ সৈয়দ খুররম আহমদ।
স্থানীয়রা জানান, কোন প্রসূতি মায়ের সিজারের প্রয়োজন হলে আগে বিভাগীয় শহর সিলেট যাওয়া ছাড়া বিকল্প উপায় ছিল না। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ব্যবস্থা চালু করায় কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই সিজারিয়ান সেবা পাওয়া যাবে।
হাসপাতালে প্রথম অস্ত্রোপচারে জন্ম নেয়া শিশুটির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, প্রথমে কিছুটা ভয়ে ছিলাম কারণ হাসপাতালে প্রথম সিজার এটি। সুষ্ঠুভাবে সিজার সম্পন্ন হওয়ার পর খুবই উপকৃত হয়েছি। অন্য কোথায়ও সিজার করলে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হতো। কিন্তু হাসপাতালে ফ্রি সেবা পেয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু সালেহীন খান বলেন, মাননীয় সাদস্য মুহিবুর রহমান মানিক মহোদয় অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সার্বিক মান উন্নয়নের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনা দিয়েছেন বলেই দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ একটি মেজর অপারেশন (সিজারিয়ান) করা সম্ভব হয়েছে। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পর প্রথম সিজারে আমরা সফল হয়েছি। এ সফলতায় হাসপাতালের সব ডাক্তার ও নার্সরা সহযোগিতা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, অপারেশন থিয়েটার থেকে প্রসূতিসহ নবজাতককে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এখানেই প্রসূতি এবং নবজাতককে সেবা দেয়া হচ্ছে। সিজারিয়ান অপারেশন অব্যাহত রাখার জন্য গাইনী কনসালটেন্ট পদায়ন দরকার।