কাজির বাজার ডেস্ক
দেশের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। রোববার ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। আবেদন গ্রহণ শেষ হওয়ার পর আগামী আগস্ট মাসে নেওয়া হবে নিয়োগ পরীক্ষা। ওই সময় পর্যন্ত শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
জানা গেছে, জুন মাস পর্যন্ত সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭ হাজার শূন্য পদ রয়েছে। চলমান নিয়োগে এই পদের বিপরীতে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ জন্য দেশের আট বিভাগে আলাদাভাবে তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে আলাদাভাবে লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষা আগস্টে নেওয়া হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে জানা গেছে।
গত ২৮ ফেব্রæয়ারি প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এসব বিভাগে আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৪ মার্চ। দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মার্চ ময়মনসিংহ, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ তিন বিভাগে আবেদনের শেষ সময় ছিল ১৪ এপ্রিল।
ডিপিইর সংশ্লিষ্টরা জানান, সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭ হাজার সহকারী শিক্ষক শূন্য পদে দেশের আট বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য তিনটি ধাপে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে গত ২৮ ফেব্রæয়ারি সিলেট, ২৩ মার্চ বরিশাল ও রংপুর বিভাগে, দ্বিতীয় ধাপে খুলনা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ এবং ১৮ জুন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে ফলাফল প্রকাশের আগে আরও কিছু শিক্ষক পদ শূন্য হতে পারে। সেক্ষেত্রে সারাদেশের মোট ৭ হাজার শূন্য পদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
৬ বিভাগে ৮ লাখ আবেদন : প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম বিভাগ বাদে বাকি ছয় বিভাগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৮ লাখ ১৩৮জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছে। এর মধ্যে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭০০ ও ময়মনসিংহ, খুলনা ও রাজশাহী ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪৩৮টি আবেদন জমা হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগে অবশেষে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের তিন পার্বত্য জেলা (বান্দরবন রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি) ছাড়া অন্যান্য জেলার আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ২৪ জুন থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিয়োগপ্রত্যাশীরা এ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীকে পরীক্ষার ফি বাবদ যেকোনো টেলিটক নম্বর থেকে ২২০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ২০২৩ সালের ৮ জুলাই ন্যূনতম ও সর্বোচ্চ ২১ থেকে ৩০ বছর হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে বয়স উল্লিখিত তারিখে ন্যূনতম ও সর্বোচ্চ ২১-৩২ বছর হতে হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ অনুসরণ করা হবে।
সম্প্রতি সংসদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানান, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭ হাজারেরও বেশি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের সংখ্যা ২৯ হাজার ৮৫৮। বর্তমানে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৩৪। অর্থাৎ দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে গড়ে ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য রয়েছেন একজন করে শিক্ষক।
সর্বশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭ হাজার শিক্ষক গত জানুয়ারি মাসে প্রাথমিক স্কুলে যোগদান করেছেন। তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে প্রায় দেড় বছর সময় লেগেছে।