জগন্নাথপুরে অবশেষে নদীতে এলো নতুন পানি, চলছে মাছ ধরার হিড়িক

5

মো.শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর থেকে

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অবশেষে নদ-নদীতে নতুন পানি আসতে শুরু করেছে। নতুন পানিতে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরতে সৌখিন শিকারিদের মাঝে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। অন্য বছর বৈশাখের শেষ দিকে জগন্নাথপুরে বর্ষার পানি আসলেও এবার জ্যৈষ্ঠের শেষে পানি এসেছে। এর আগে চলছিল পানির জন্য হাহাকার। উপজেলাজুড়ে দেখা দিয়েছিল মাছের আকাল। অবশেষে অনেক দেরিতে হলেও পানি আসায় জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে।
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে নদ-নদীতে নতুন পানি আসতে শুরু করে। ১৪ জুন বুধবার দেখা যায়, জগন্নাথপুর পৌর শহরের নলজুর নদী সহ বিভিন্ন নদ-নদীতে আসা নতুন পানিতে মাছ শিকারের হিড়িক পড়েছে। বিভিন্ন ধরণের জাল দিয়ে মাছ শিকারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সৌখিন শিকারিরা। এ যেন গ্রাম বাংলার চিরচেনা রূপ। যা প্রতি বছর নতুন পানি আসলে দেখা যায়।
নদীতে নতুন পানিতে মাছ ধরার দৃশ্য দেখে ইমরান হোসেন, কবির মিয়া, ইসলাম উদ্দিন, রফিক মিয়া, বীরেন্দ্র দাস, কপিল গোপ সহ পথচারীদের মধ্যে অনেকে বলেন, এই হচ্ছে আমাদের গ্রাম বাংলা আসল রূপ। প্রতি বছরের এই সময়ে নতুন পানি আসলে নানা পেশার মানুষ মাছ ধরেন। এটি রীতিমতো মাছ ধরা উৎসব বলা যেতে পারে। নদীতে মাছ ধরতে আসা সৌখিন শিকারিদের মধ্যে অনেকে বলেন, নতুন পানিতে দেশীয় মাছ ধরার আনন্দই আলাদা।
সচেতন মহলের অনেকে বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে প্রচন্ড গরম থেকে রক্ষা হয়েছে। সেই সাথে অনেক পরে হলেও নতুন পানি আসায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। শুধু তাই নয়, বৃষ্টিপাতে গরম হ্রাস পাওয়ায় ও নদীতে নতুন পানি আসায় জনজীবনের সাথে অগ্নিমূর্ত প্রকৃতিতেও যেন শান্তির পরশ লেগেছে। এখন নতুন পানির সাথে আসা দেশীয় প্রজাতির সকল মাছের পোনা রক্ষা করতে হবে। তা হলে আর মাছের আকাল থাকবে না। আবারো মাছে মাছে ভরে যাবে জগন্নাথপুর উপজেলার সকল খাল-বিল, নদী-নালা ও হাওর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, এখন নদীগুলোতে বর্ষার পানি আসতে শুরু করেছে। অচিরেই হারওগুলো পানিতে ভরে যাবে। এতে দেশীয় মাছের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পোনামাছ রক্ষায় আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এসব পোনামাছ রক্ষা হলেই আবারো মাছে মাছে সয়লাব হয়ে যাবে জগন্নাথপুর। কোথাও আর মাছের আকাল থাকবে না। তাই পোনামাছ রক্ষায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি মৎস্যজীবিদের উদ্দেশ্যে বলেন, পোনামাছ মারা ও বিক্রিকরা দন্ডনীয় অপরাধ। আপনারা এসব পোনামাছ ধরবেন না। পোনা মাছকে বড় হতে দিন। পরে এসব মাছ তো আপনারাই ধরবেন। মাছ বড় হলে আপনারাই লাভবান হবেন। সুতরাং কোন অবস্থায় পোনামাছ মারা যাবে না। পোনামাছ রক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আমরা চাই না আপনারা কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হন। তিনি সবার প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সবাই মিলে দেশ ও জাতির স্বার্থে পোনামাছকে রক্ষা করি। তা হলেই মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ হবে দেশ।