এরদোয়ানকে যেসব চ্যালেঞ্জ সামাল দিতে হবে

5

৫২ দশমিক ১৪ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী

কাজির বাজার ডেস্ক

২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান আরও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছেন। রোববার দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় ধাপে নেওয়া ভোটে এরদোয়ান ৫২ দশমিক ১৪ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকট প্রতিদ্ব›দ্বী কেমাল পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। তবে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেলেও এরদোয়ানকে আগামী বছরগুলোতে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। দেশটিতে বছরে প্রায় ৪৪ শতাংশ হারে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এছাড়া খাদ্য, বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য পণ্যের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে দেশটিতে। তাই এরদোয়ানকে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিতে চাঙ্গা ভাব আনতে হবে। গত দুই বছরে দেশটির মুদ্রা লিরার রেকর্ড দরপতন হয়েছে। প্রথমবারের মতো গত শুক্রবার এক ডলারের বিপরীতে লিরার মান পৌঁছেছে ২০-এ। মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হচ্ছে তুরস্ক। ন্যাটোতে ফিনল্যান্ডের সদস্য হওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল তুরস্ক। তবে পরবর্তীতে সেই ঝামেলা মিটে যায়। এখন প্রশ্ন উঠেছে সুইডেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে। এতেও এরদোয়ানকে কৌশল অবলম্বন করতে হবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ছাড়া প্রতিবেশী সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক তলানিতে। এক্ষেত্রেও পরীক্ষা দিতে হবে এরদোয়ানকে। তিনি প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকে উৎখাতে দেশটির বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে উত্তরাঞ্চলীয় সিরিয়ায় জিহাদি ও কুর্দিশ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় আঙ্কারা। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এরদোয়ান দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা চালান। তবে তাতে ব্যর্থ হন এরদোয়ান। আসাদ দাবি করেন, এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার পূর্ব শর্ত হচ্ছে উত্তর সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের দখলে থাকা অঞ্চল থেকে তুর্কি বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া। সেইসঙ্গে আসাদ বিদ্রোহী বাহিনীর ওপর থেকে তুরস্কের সমর্থন তুলে নেওয়ার দাবি জানান। এ ছাড়া তুরস্ক এখন চাচ্ছে দেশটিতে থাকা ৩০ লাখের বেশি সিরিয় শরণার্থী যেন সিরিয়ায় ফেরত যায়। এক্ষেত্রেও এরদোয়ানকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। এ ছাড়া চলতি বছরের গত ফেব্রæয়ারি তুরস্কজুড়ে জোড়া শক্তিশালী ভ‚মিকম্প আঘাত হানে। এতে দেশটির অন্তত ৫০ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে। সেইসঙ্গে হাজার হাজার বাসিন্দা ঘরছাড়া হয়। এখনো বহু বাসিন্দা তাঁবুতে বসবাস করছেন। ভ‚মিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি এবং ভবন সংস্কারের কাজ করতে হবে। এরদোয়ান ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ইস্তানবুলের মেয়র ছিলেন। এরপর তিনি ২০০৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট হন ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বিরুদ্ধে পরিচালিত এক অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি সফলভাবে তা কাটিয়ে উঠেন। ২০১৭ সালে সংবিধান সংশোধনের ওপর অনুষ্ঠিত বিতর্কিত এক গণভোটেও তিনি জয়ী হন। ফলে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠেন তিনি।
এরপর ২০১৮ সালের জুন মাসে প্রথম রাউন্ড নির্বাচনে ব্যাপক ভোটে বিজয়ী হয়ে এরদোয়ান দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। শেষমেশ তৃতীয় মেয়াদে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেন।