নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নবীগঞ্জের সালামতপুর পৌর বাস টার্মিনাল। প্রায় দুই একর জমির ওপর নির্মিত এই বাস টার্মিনালটি গত ৫ বছরেও ব্যবহারের আওতায় আনা হয়নি। শুরুর পর উপজেলা প্রশাসন ও নবীগঞ্জ পৌরসভা কিছুদিনের জন্য পরিবহনগুলোকে এখানে নিলেও এক মাসের মাথায় আবারও সেগুলো চলে যায় শহরের মধ্যে। ফলে তীব্র যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে নবীগঞ্জ। টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অযতœ-অবহেলায় পড়ে আছে দুই-তিনটি ট্রাক। গোটা টার্মিনাল খাঁ খাঁ করছে। বাস টার্মিনাল হলেও বাসের কোনো দেখা নেই। ভেতরে বাসের কাউন্টার ও গাড়ি রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকলেও, বাসগুলো থাকে নবীগঞ্জ শহরের বাংলা টাউন ও হাসপাতাল সড়কের মূল সড়কের ওপর। ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরাও সেই সড়ক থেকেই গাড়িতে ওঠেন। যাত্রী পাওয়ার জন্য পরিবহন কর্তৃপক্ষ নিয়ম অমান্য করে টার্মিনালের বাইরে একাধিক কাউন্টার করেছে।
রুবেল আহমদ নামে এক যাত্রী জানান, বাইরে থেকে সবকিছু বেশ সুন্দর এবং পরিপাটি দেখা গেলেও টার্মিনালের ভেতরের অবস্থা খুবই করুণ। সেখানে টোকাই আর হকারদের আবাসস্থল- দিনভর চলে মাদককারবারি আর মাদকসেবীদের বিচরণ। চাঁদাবাজি ও চুরি-ছিনতাইসহ নানা সমস্যার কারণে সাধারণ মানুষ এদিকে আসতেই চায় না। স্থানীয়দের ভাষ্য, সালামতপুর হবিগঞ্জ জেলার জনসাধারণের সড়কপথের একমাত্র ভরসা। যার কারণেই এখানে ব্যয়বহুল এই টার্মিনাল নির্মাণ। মাঝে টার্মিনালটি কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হলেও নানা সমস্যায় জর্জরিত। বাস টার্মিনালের ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য পর্যাপ্ত লোকবল নেই। টার্মিনাল পরিষ্কার করা হলেও মানুষ আবার তা ময়লা দিয়ে ভরে ফেলে। বাস টার্মিনালটি শহরের বাইরে হওয়ায় সেখানে যাত্রীরা যেতে চান না। বাস টার্মিনালের বাইরে অপেক্ষারত যাত্রী মুকিদুল ইসলাম জানান, ‘টার্মিনালের ভেতরে কাদাপানি, ময়লা-আবর্জনা আর দুর্গন্ধ। তাছাড়া বাস তো এই রাস্তা দিয়ে যাবে। জাকারিয়া নামে আরেক যাত্রী জানান, টার্মিনাল এখন সড়কের ওপরেই; তাই আর ভেতরে কেউ যায় না। ব্যবস্থা নিয়ে বাধ্য করা না হলে পরিবহন ব্যবসায়ী ও যাত্রী কেউই শুধরাবে না। টার্মিনাল ওভাবেই পড়ে থাকবে।
পৌর মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী জানান, সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে সালামতপুর বাস টার্মিনালকে ব্যবহারের আওতায় আনার। তবে বাস মালিক ও শ্রমিকরা বারবার সিদ্ধান্ত অমান্য করে যাচ্ছেন। এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে, নির্ধারিত বাস টার্মিনাল ব্যবহারে বাধ্য করা হবে।
ইউএনও ইমরান শাহরিয়ার জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ বাস কাউন্টার ও স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হবে।