সিলেটে নানা আয়োজনে মহান মে দিবস পালিত
স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত সচিব ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেছেন, মে দিবসের চেতনাকে ধারণ করে শ্রমিক ও মালিকপক্ষকে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করে দেশকে শিল্পায়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের এই মে দিবসে আমাদের সব মেহনতি শ্রমিক ভাইবোনদের এবং মালিকপক্ষকে আমি এটুকুই বলব, এই মে দিবসের চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। ‘মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক হতে হবে হৃদ্যতাপূর্ণ। একে অপরের পরিপূরক হয়ে কাজ করলেই কেবল দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে সর্বদা মালিক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি আপনাদের জন্য, বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের জন্য। কাজেই শেখ হাসিনা আছেন আপনাদের সঙ্গে। মে দিবসের যে সংগ্রামী চেতনা, সেই চেতনাকে মাথায় নিয়েই আমাদের দেশকে ধীরে ধীরে শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান সরকার।
তিনি সোমবার সকাল ১১টায় মহান মে দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা প্রশাসন ও আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর ও শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের উদ্যোগে রিকাবীবাজারস্থ নজরুল অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। এর পূর্বে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রিকাবীবাজার নজরুল এডিটোরিয়ামে সমাপ্ত হয়। ‘শ্রমিক মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ সেøাগানকে সামনে রেখে সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান এর সভাপতিত্বে ও সিলেট জেলা কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশ গুপ্তের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন-সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) মোঃ জোবায়েদুর রহমান, পিপিএম, অতিরিক্ত ডিআইজি এম এ জলিল, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রভিশনাল ডিআইজি এম. এ জলিল, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর-অপরাধ) সাদেক কাউসার দস্তগীর, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দীন খান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন-সিলেট আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন-সিলেট কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক তপন বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা।
অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-সাবেক জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, সিলেট জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক, সাধারণ সম্পাদক শামীম রশিদ চৌধুরী, সিলেট জেলা গৃহ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ তোফায়েল আহমদ শেপুল, সিলেট কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক অনিরুদ্ধ মহালদার, শ্রম পরিদর্শক মাহবুবুল আলম, কাউছার আলী মীর, আব্দুল হাকিম, সহ-পরিচালক মো. আবুল বাশার, শ্রম কর্মকর্তা মো. আলমগীর সহ শ্রমিক নেতা, শ্রমিক কর্মকর্তা সহ প্রমুখ। আওয়ামী লীগসহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কর্মজীবী এবং বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠনের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা শ্রমিক লীগ:
মহান মে দিবস উপলক্ষে জেলা শ্রমিক লীগের র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। র্যালি ও সমাবেশে প্রধান অথিতি ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
র্যালিতে নেতৃত্ব দেন জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক, সাধারন সম্পাদক শামীম রশীদ চৌধুরী, সহ সভাপতি আব্দুল জলিল, সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক সুশান্ত দেব, ক্রীড়া সম্পাদক শাহ আলম ছুরুক, সহসম্পাদক ও নির্মান শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর এ আলম, সহ সম্পাদক ও জেলা স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সমেন্দ্র্র সিংহ, সিনিয়র সদস্য রোস্তম খান, সদস্য বীর মুক্তিযুদ্ধা আকমল হোসেন, সিলেট গ্যাস ফিল্ড সিবিএ এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবাহান, পোস্ট অফিস কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক ফুকন মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন, সদর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মকবুল হোসেন খান, সাধারন সম্পাদক ফয়ছল মাহমুদ, ব্যাংক কর্মচারী ফেডারেশনের প্রাক্তন সভাপতি মোফাখখারুল ঈসলাম, টিএন্ডটি ফেডারেল ইউনিয়ন সিবিএ সিলেট অঞ্চলের সভাপতি মুনির উদ্দিন, ব্যাংক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি ও সোনালী ব্যাংক সিবিএ সিলেট অঞ্চলের সাধারন সম্পাদক খালেদ আহমদ চৌধুরী, ব্যাংক কর্মচারী ফেডারেশনের কার্য্যকরি সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংক সিবিএ সিলেট শাখার সভাপতি আজিজুর রহমান, ব্যাংক কর্মচারী ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কৃষি ব্যাংক সিবিএ সিলেট অঞ্চলের সাধারন সম্পাদক শানুর আলী, ব্যাংক কর্মচারী ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জনতা ব্যাংক সিবিএ সিলেট অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক মীর ইয়াকুত আলী দুলাল, ব্যাংক কর্মচারী ফেডারেশনের অর্থ সম্পাদক ও রুপালী ব্যাংক সিবিএ সিলেট অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, জেলা অটোবাইক শ্রমিক লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সিবিএ সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, সিলেট গ্যাসফিল্ড সিবিএ এর নেতা আব্দুল খালিক, মোতাল্লেব হোসেন, নাজমুল হোসেন, টিএন্ডটি ফেডারেল ইউনিয়ন সিবিএ সিলেট অঞ্চলের নেতা মুজিবুর রহমান, সদর উপজেলা শ্রমিক লীগ নেতা সাহেদ আহমেদ, হুমায়ূন কবীর, চন্দু মিয়া, শ্রমিক নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা ওহিদ মিয়া প্রমূখ।
জেলা ও মহানগর শ্রমিক দল: বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, আওয়ামীলীগের অপশাসনের কারনে দেশের শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে কষ্টে আছে। নিত্যপন্যের মূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি, বার বার তেল-গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারনে দেশের সাধারণ মানুষের ন্যায় শ্রমজীবীরাও ভলো নেই। সরকারের লাগামহীন লুটপাট, দূর্নীতি ও অর্থ পাচারের কারনে দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ায় শ্রমজীবী মানুষরা তাদের শ্রমের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। সবচেয়ে অবহেলিত আছেন দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক দিনমজুররা। মেগা প্রকল্পের নামে সরকার দলীয় নেতাদের মেগা দূর্নীতির কারনে মধ্যবিত্তরা নিম্নবিত্ত শ্রেণীতে নামছে আর নিম্নবিত্তরা দারিদ্র সীমার নিচে চলে যাচ্ছে। আওয়ামীলীগ আর কিছুদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষকে বাঁচতে দেবে না। তাই শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরা নয়, শ্রমজীবী মানুষ ও সর্বস্তরের জনগনকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজপথে নামতে হবে।
সোমবার দুপুরে নগরীর আম্বরখানা পয়েন্টে সিলেট জেলা ও মহানগর শ্রমিক দলের উদ্যোগে মহান মে দিবস উপলক্ষে র্যালি পরবর্তী সংক্ষিপ্ত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। র্যালীটি নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
সিলেট জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সুরমান আলীর সভাপতিত্বে, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ও মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জীবনের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মহানগর শ্রমিক দলের আহবায়ক আব্দুল আহাদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আওয়ামীলীগের লাগামহীন লুটপাটের কারনে দেশ আজ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে। ফলে দেশের শ্রমজীবী ভাইবোনেরা পরিবার নিয়ে দু’বেলা পেটভারে খেতে পারে না। দেশের একটি নির্দিষ্ট গোস্টি লুটপাট করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ছে, আর দেশের সাধারণ মানুষে পেটভরে দু’বেলা খেতে পারে না। এমনটি চলতে দেয়া যায় না। এই বৈষম্য দূর করতে হলে দেশনায়ক তারেক রহমান ঘোষিত ১০ দফা দাবীর পক্ষে দেশের অন্যান্য পেশাজীবি ও সাধারণ মানুষের ন্যায় শ্রমজীবীদেরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সময় আর বেশী বাকি নেই, লুটেরাদের পতন অনিবার্য।
মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, আওয়ামীলীগের দুঃশাসনের ফলে দেশের সাধারণ মানুষের ন্যায় শ্রমজীবীরাও অতিষ্ঠ। দেশে সর্বস্থরের মানুষ এখন বিএনপির ১০ দফা দাবীর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে। তাই আওয়ামীলীগের বিদায় সুনিশ্চিত।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের নামে জনগনের সাথে তামাশা করছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে বিএনপির চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে চায়। আমরা বিশ্বাস করি বিএনপির কোন নেতাকর্মী আওয়ামীলীগের পাতানো ফাঁদে পা দেবে না। দলের কোন নেতা বা কর্মী এই সরকারের অধিনে প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নিলে তা বরদাস্ত করা হবে না। সমাবেশে সিলেট জেলা ও মাহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, শ্রমিকদল সহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট: মহান মে দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে লাল পতাকা মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার সকাল ১১টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা আহŸায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহŸায়ক প্রণব জ্যোতি পাল এর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন- বাসদ সিলেট জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নাজিকুল ইসলাম রানা, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের আহŸায়ক মাছুমা খানম, সংগ্রাম পরিষদের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর আহŸায়ক সনজয় শর্মা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর বেলাল আহমদ, ইয়াছিন আহমদ, মিন্টু যাদব, শহীদ আহমদ, কাওছার হোসেন, জাহেদ আহমদ, চা শ্রমিক ফেডারেশনের করোনা কর্মকার, সংগ্রাম পরিষদের রুমন আহমদ, ইউসুফ আলী, ইরশাদ আলী, আনোয়ার হোসেন কুটি, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৩৭বছর আগে অগাষ্ট, স্পাইজ, সীমফেলডেন, লুই নিবোসহ অসংখ্য শ্রমিক নেতৃত্বের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ৮ ঘন্টা কর্মদিবসের যে অধিকার অর্জিত হয়েছিল সেটির সাথে ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তাটিও যুক্ত ছিল। খাতা-কলমে ৮ ঘন্টার বিধান থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় কম মজুরি প্রদান, প্রকৃত মজুরি কমিয়ে দেওয়া, মজুরি এবং চাকরির সাথে উচ্চ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার শর্ত অরোপসহ নানা কৌশলে সেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হচ্ছে প্রায় প্রতিটি শ্রমজীবী মানুষকে। অর্থাৎ শ্রমিক হারিয়েছে তার অর্জিত অধিকার। উৎপাদন আর সম্পদ বৃদ্ধির তুলনায় বৈষম্য বাড়ছে বহুগুন। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির নব নব আবিস্কার মানব সমাজের কষ্ট লঘব এবং সমৃদ্ধির উপাদান না হয়ে আল্প কিছু মানুষের বিলাস আর সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের বেদনার কারনে পরিণত হয়েছে। বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে ৭ কোটি ৩৪ লাখ শ্রমশক্তির মধ্যে ৬ কোটি ৫০ লাখ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। তাদের নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা, নিয়মিত মজুরি কিংবা আইনগত অধিকার কোনোটারই নিশ্চয়তা নেই। ২০০৬ সালে প্রবর্তিত এবং ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সংশোধিত শ্রম আইনের ১৭৯ ও ১৮০ ধারার মাধ্যমে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সংকুচিত করা হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা, শ্রম আইনের অগণতান্ত্রিক ধারা সমূহ ও সংসদে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল বাতিল করার আহŸান জানান। বক্তারা অবিলম্বে নীতিমালা চ‚ড়ান্ত করে প্রকৃত মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাটারি চালিত যানবাহনের লাইসেন্স প্রদান ও চা শ্রমিকদের এরিয়া বিল প্রদানসহ নগদ ৬০০ টাকা মজুরির দাবি জানান। বক্তারা, মহান মে দিবসে শ্রম অধিকার সংকোচনের সকল জাল ছিন্ন করে উৎপাদনের অনুপাতে মালিকানা এবং জীবীকার জন্য জীবন নয় বরং জীবনের জন্য জীবীকা এই নীতির ভিত্তিতে শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম গড়ে তোলার আহŸান জানান।