গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। পাইকারিতে দাম বৃদ্ধির দেড় মাসের মাথায় খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সুপারিশ এলো। চলতি মাসেই এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পাশাপাশি দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসতে পারে। তবে দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে দাম বাড়ানো হলে তা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। গত নভেম্বরে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এর প্রভাব আপাতত সাধারণ গ্রাহকদের ওপর পড়বে না।
সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে বিইআরসি। এর পর বিদ্যুতের খুচরা দাম বৃদ্ধির আবেদন করে পাঁচ প্রতিষ্ঠান।
বৈশ্বিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে অর্থনৈতিক সংকট এখন প্রকট। সে ক্ষেত্রে এ খাতে সরকারের ভর্তুকি অব্যাহত রাখা উচিত বলে মনে করি আমরা। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাহক পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধি যদি এক বছর পরে করা হয়, তা হলে গ্রাহকদের জন্য ভালো হবে। অন্যথায় বাজারের যে সার্বিক অবস্থা, গ্রাহক পর্যায়ে এখন দাম বাড়ালে ভোক্তাদের ওপর দ্বিগুণ চাপ পড়বে। এখন এমনিতেই সবকিছুর দাম বেশি। এ সময়ে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোই উচিত হবে।
মূলত বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে এ খাতের সিস্টেম লস দূর করার বিষয়ে মনোনিবেশ করা উচিত সরকারের। তা হলে এ খাতের অপচয় দূর হবে। বিদ্যুৎ খাতে সিস্টেম লসের কারণে অপচয় হচ্ছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। এর দায় চাপছে গ্রাহকদের ওপর।
এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে আক্ষরিক অর্থেই সাধারণ মানুষের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে। সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে আমাদের। একদিকে করোনার ক্ষত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি ইত্যাদিতে নাকাল হয়ে আছে মানুষের জীবন। এ সময় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম কোনোক্রমেই বাড়ানো উচিত হবে না।