বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
কৃষি উপকরণ সহ কৃষি শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বোরো আবাদ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন হাওর পারের কৃষক। হাতে নগদ টাকা না থাকায় অনেকেই জমি রোপণের টাকার জন্য ধার দেনা করছেন। অনেকে এনজিও ঋণ নিয়েছেন, অনেকে মহাজনী ঋণ নিয়ে টেনে টুনে কোন রকম জমি রোপণ করছেন। জমি রোপণের পর রয়েছে সেচ, সার সহ কীটনাশক ব্যয়। সব মিলিয়ে কৃষক অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। কি করবেন বুঝতে পারছেন না।
শনি হাওর পার উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম, তিনি জানান, ইতি মধ্যে তিনি ৫ একর জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন, প্রতি একর জমি পাওয়ার ট্রিলারে চাষাবাদ করতে গিয়ে পাওয়ার ট্রিলার মালিককে একর প্রতি ৭শ’ টাকা দিয়েছেন। গত বছর এক একর জমি চাষাাদ করতে ট্রিলার মালিকরা ৫শ’ থেকে ৫শ’ ৫০ টাকা নিতেন, এবার ৭শ’ টাকার কম তারা মানছেন না।
শুধু কৃষক আবুল কাশেম নয় শনির হাওরের আরো একাধিক কৃষক, জসিম উদ্দিন, ইয়াকুব আলী, সাবলু মিয়া জানান, গত বছর থেকে এবার সব কিছুতে দাম বেড়েছে। বীজ ধান, সার, কীটনাশক, সহ রোপণ শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে। কোনটাই আর কমে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে উৎপাদন আ খরচের ব্যয়ভার নিয়ে কিছুট চিন্তিত হয়ে পড়ছেন কৃষক।
মাটিয়ান হাওরপার বড়দল গ্রামের কৃষক ফয়সল মিয়া তিনি জানান, গত বছর রোপণ শ্রমিকের মজুরী ছিলো ৩শ’ ৫০ টাকা থেকে ৪শ’ টাকা। এবছর বোরো ধান রোপণের শুরুতেই শ্রমিক মজুরী ৫শ’ টাকা। পুরোদমে জমি রোপণ শুরু হলে ৬শ’ টাকাও হতে পারে শ্রমিক মজুরী।
তাহিরপুর সদর মধ্য তাহিরপুর গ্রামের পাওয়ার ট্রিলার মালকি আব্দুল মিয়া, তিনি জানান, বর্তমানে ডিজেলর বাজার দর রয়েছে প্রতি লিটার ১শ’ ১০ টাকা, এ অবস্থায় ৫শ’ বা ৫শ’ ৫০ টাকা প্রতি একর জমি চাষাবাদ করা কোন সুযোগ নাই। তাই তিনি এবার প্রতি একর জমি চাষাবাদ করে ৭শ’ টাকা নিচ্ছেন কৃষকদের কাছ থেকে।
মধ্য তাহিরপুর গ্রামের কৃষি (ধান রোপণ) শ্রমিক কাচা মিয়া বলেন, বাজারে সব কিছুর দর বেশি সে কারণেই এবার কামলার (কৃষি শ্রমিক) দরও এবার একটু বেশি।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান উদ দৌলা বলেন, ধান রোপণ শ্রমিক কিছুটা সংকট রয়েছে। সংকট থাকার কারণে শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি হাওর পারের অনেক কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছি রাইস প্লান্টার দিয়ে জমি রোপণ করার জন্য। রাইস প্ল্যান্টার দিয়ে জমি রোপণ করলে শ্রমিকের ঘাটতি পূরণ হবে।