স্টাফ রিপোর্টার :
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশের প্রতিটি বিভাগে বিএনপি’র ডাকা গণসমাবেশের আয়োজন করার পর আজ শনিবার ঢাকার গোলাপবাগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপি’র সর্বশেষ বিশাল গণসমাবেশ। গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে দুদিন আগে থেকেই ঢাকা উত্তপ্ত। বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন একজন। এ অবস্থায় কাজ থাকলেও ‘ভয়ে’ সিলেটের অনেকেই যাচ্ছেন না ঢাকায়- এমনটাই বলছেন সিলেটের পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের বিভিন্ন কাউন্টারে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের কথা বললে তারা জানান- অন্যান্য বৃহস্পতিবারে বিকেল থেকে কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় লেগে যায়। টিকিট দিতে ঘাম ছুটে যায় কর্মীদের। যাত্রীদের চাপ সামলাতে বাসের সংখ্যাও বাড়াতে হয়। অথচ আজ একেবারে বিপরীত চিত্র। যাত্রী একেবারেই নেই, টিকিটও তেমন বিক্রি হচ্ছে না। বুধবার থেকেই ঢাকাগামী যাত্রী সংখ্যা অর্ধেক কমে গেছে।
যাত্রীর সংখ্যা কমেছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ঢাকায় ঝামেলা চলছে। আজ ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ নিয়ে আরও গ-গোল হতে পারে, এই ভয়ে সিলেটের মানুষজন ঢাকা যাচ্ছে না।
দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বরের ইউনিক, হানিফ, এনা, শ্যামলী, সোহাগ, লন্ডন এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন বাসের কাউন্টারে একই দৃশ্য দেখা যায় বৃহস্পতিবার বিকেলে। সবগুলো কাউন্টারই ছিলো প্রায় ফাঁকা, ছিল না যাত্রীদের তেমন আনাগোনা।
তবে সিলেট বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে- সিলেটের বাস কাউন্টারগুলোতে গত মঙ্গলবার থেকে যাত্রীদের ঢাকায় যেতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন- ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ হচ্ছে ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ। এতে সিলেট থেকে সংঘবদ্ধভাবে নেতাকর্মীদের যেতে হবে- এমন কোনো নির্দেশনা নেই। তবে ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই যাচ্ছেন। ধরণা করা হচ্ছে- ১০ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী সিলেটে থেকে ঢাকায় পৌঁছবেন। ৯ ডিসেম্বর বলা যাবে- সিলেট থেকে আসলে কত হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় গেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন-সিলেটের বাস কাউন্টারগুলোতে নিরুৎসাহিত করা ও পথে পথে বাধার বিষয়ে আমাদের বেশ কিছু নেতাকর্মীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে- আওয়ামী লীগ সরকার এসব বাধা-বিপত্তির মাধ্যমে তাদের পতনকে আরও ত্বরান্বিত করছে।
এদিকে, সিলেট থেকে ঢাকাগামী বাসের সংখ্যা কমলেও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সিলেট থেকে বাস চালাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বাস বন্ধ করার এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বাস মালিক ও শ্রমিকরা।
যাত্রী অর্ধেক কমে গেছে জানিয়ে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, আগে প্রতিদিনই বিভিন্ন কোম্পানির ২০ থেকে ২২টি বাস সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেত। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে বাসের সংখ্যা আরও বাড়াতে হতো। কিন্তু কোনো কোম্পানিরই ১০টি বাস ছেড়ে যায়নি। যাত্রী না থাকায় বাস ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন- পথে পথে হয়রানির অভিযোগ আছে। তবে বাস চলাচলে এখন পর্যন্ত কোনো বাধা আসেনি।