ভারতের এলসি পাথরের সাথে আসা বোমা বিস্ফোরিত হয়ে জাফলংয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

17

কে.এম লিমন গোয়াইনঘাট থেকে :
ভারতের এলসি পাথরের সাথে আসা বোমা বিস্ফোরিত হয়ে জাফলংয়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই শিশুর নাম জুয়েল মিয়া (১০)। সে উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার ময়না মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির ছাত্র। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ময়না মিয়ার বসতঘরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুয়েলের বাবা ময়না মিয়া ও মা জোসনা বেগম দীর্ঘদিন ধরে জাফলংয়ের একটি কলোনীতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে দেশে আনা পাথর ভাঙার কাজ করতেন।
শনিবার সন্ধ্যায় শিশুটি এলসি পাথর থেকে কুড়িয়ে পাওয়া খেলনা সদৃশ্য তার সংযুক্ত বস্তুটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খেলা করছিল। ওই তারে মুঠোফোনের একটি ব্যাটারি সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছিল জুয়েল। এ সময় হঠাৎই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে জুয়েলের মুখ গুরুতরভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়। এ সময় তার বাবা-মাসহ আশপাশের প্রতিবেশীরা বিকট শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখতে পায় রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে শিশু জুয়েল। পরে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জুয়েলকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ধারণা করছে, ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে নিয়ে আসা পাথরের সঙ্গে কোনো বিস্ফোরক ভুলবশত এসেছিল। যেটি ওই শিশু কুড়িয়ে পেয়েছিল। খেলনা সদৃশ্য ওই বস্তুটি বিস্ফোরক হতে পারে। সেটিই বিস্ফোরিত হয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। স্থানীয় লোকজনের সাথে আলাপকালে জানাযায় এরআগেও প্রায় ৪-৫ বছর পূর্বে তামাবিলে এলসি পাথর লোড-আনলোড করার সময় এমন এক বস্তুর বিস্ফোরণে এক শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
এ দিকে ঘটনার খবর পেয়ে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ সেলিম, গোয়াইনঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে. এম নজরুলসহ পিবিআই ও সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে.এম. নজরুল বলেন, পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে নিয়ে আসা পাথরে সঙ্গে হঠাৎই বিস্ফোরক জাতীয় বস্তু চলে আসে। যেগুলো ওই দেশে পাথর ভাঙার কাজে ব্যবহৃত হয়। সেরকম একটি বস্তু শিশুটির হাতে বিস্ফোরিত হয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক টিম তদন্ত করছে।