সিলেটে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট

6

স্টাফ রিপোর্টার :
সনাতন পদ্ধতিতে পাথর তোলার অনুমতি ও কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেটে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট। গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি শেষ হবে আজ বুধবার সকাল ৬টায়। তবে পরিবহণ নেতারা বলছেন দাবি আদায় না হলে ধর্মঘটের সময়সীমা আরো বাড়ানো হতে পারে। একই সাথে পুরো সিলেট বিভাগে ধর্মঘট ডাকার কথা জানিয়ছেন তারা। সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে সিলেট জেলার মধ্যে এই ধর্মঘট চলছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে জেলার সড়ক মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাক, ট্যাংক লরি, কাভার্ডভ্যান, পিকআপসহ পণ্যবাহী যানবাহন আটক দিচ্ছেন শ্রমিকরা। একই চিত্র দেখা গিয়েছিল গত সোমবার ঘর্মঘটের প্রথম দিনও। ধর্মঘটের কারণে ট্রাক টার্মিনালসহ জেলার বিভিন্নস্থানে আটকা পড়ছে পণ্যবাহী শত শত ট্রাক। মঙ্গলবার সকালে নগরীর ট্রাক টার্মিনাল এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মিছিল করেছেন শ্রমিকরা। এসময় তারা তাদের দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্লেগান দিতে থাকেন। এছাড়া সোমবার রাতে বিভিন্ন পয়েন্টে আটকে থাকা ট্রাকের সারি ছিলো। মঙ্গলবার সকালে সেই ট্রাকের সংখ্যা কম দেখা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে রাতে হয়তো গন্তব্যে ছেড়ে গেছে পণ্যবাহী কিছু ট্রাক। সিলেট সুনামগঞ্জ মহাসড়কের কুমারগাঁও তেমুখি পয়ন্টেও আগের দিনের আটকে থাকা পণ্যবাহী ট্রাক দেখা যায়নি।
সিলেটের পাইকারী সবজি বাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, গভীর রাতে কিছু ট্রাক মার্কেটে প্রবেশ করেছে। বাজারে এর কোন প্রভাব এখন পর্যন্ত পড়েনি। এছাড়া সবজির মৌসুম। বাজারে প্রচুর লোকাল সবজি রয়েছে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে গত রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে সে বৈঠকে বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। শ্রমিক নেতাদের প্রতি ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হলে তা প্রত্যাখ্যান করে ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন শ্রমিকরা।
এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক গোলাম হাদী ছয়ফুল জানান, শ্রমিকার শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করছে। তিনি দাবি আদায় না হলে পুরো বিভাগে ধর্মঘট ডাকা হবে বলে জানান।
উল্লে¬খ্য, বাংলাদেশ খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য মতে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৪, গোয়াইনঘাট উপজেলায় ২ এবং কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় একটি করে মোট ৮ পাথর কোয়ারি আছে।
ব্যুরোর তথ্য মতে, গত ৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ ‘পাথর উত্তোলনে সমস্যা নিরসনে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি’ গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ও ২ নভেম্বর ২০২০ তারিখের নির্দেশনা অনুযায়ী সব পাথর কোয়ারি ইজারা বন্ধ আছে।
এদিকে, কারও চাপে নতিস্বীকার না করতে এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশ ও সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আন্দোলনরতদের আইনের আওতায় আনার আহবান জানিয়ে গতকাল রাতে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন সিলেটের ২০ নাগরিক।