যেকোনো দেশের উন্নয়নের মূল শর্ত হচ্ছে শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ। বর্তমান সরকার শুরু থেকেই শিক্ষা উন্নয়নে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে। এ সরকারের আমলে দেশে নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কলেজ শিক্ষা খাতে সংস্কার সাধিত হয়েছে।
উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ করে ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগও নিয়েছে সরকার। বেসরকারি কলেজে শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি উন্নয়নসহ সরকারি ও বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রিতে শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের নেওয়া উদ্যোগগুলো ইতিবাচক।
২০১৬ সালে ৩২৪টি কলেজকে সরকারি করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত কলেজের বেশির ভাগই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিও পায়। ২০১৮ সালে সরকারীকরণের গেজেট প্রকাশিত হয়। কিন্তু এসব কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি খাতে নিতে গিয়ে জটিলতায় পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারীকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো ‘ডিড অব গিফট’ স্বাক্ষর করায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসব প্রতিষ্ঠানে নিজ উদ্যোগে শিক্ষক নিয়োগ এবং অর্থ ব্যয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ফলে কার্যত স্থবির হয়ে আছে প্রতিষ্ঠানগুলো। নতুন সরকারি করা কলেজগুলো থেকে গত ছয় বছরে প্রায় চার হাজার ২১৬ শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেছেন। এসব কলেজে এখনো প্রায় ১৫ হাজার ৫৫৬ শিক্ষক-কর্মচারী বেসরকারিই রয়ে গেছেন। সরকারীকরণের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। বহু শিক্ষক অবসরে গেলেও নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ করা যাচ্ছে না। খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। আবার এসব প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি অংশের টাকা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। শিক্ষকদের গ্রেড অবনমন করা হচ্ছে।
শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় অনেক কলেজের অনেক বিভাগ শিক্ষকশূন্য। অনেক কলেজ খণ্ডকালীন আটজন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করাচ্ছে। বেসরকারি কলেজগুলো সরকারি করা হলো শিক্ষার মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে। মানসম্মত শিক্ষা ছাড়া শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। কিন্তু শিক্ষক সংকটে শিক্ষার মান নিচের দিকে নামছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। কাজেই সংকটের মূলে হাত দিতে হবে। কলেজ সরকারি করতে যা কিছু করা দরকার, তা দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।