প্রতিদিন বহু মানুষকে রাস্তার পাশের খাবারের দোকান থেকে খাবার কিনে খেতে দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি হয় এসব দোকানে। এসব দোকানের খাবার তুলনামূলক কম দামের বলেই মানুষ সেখানে যাচ্ছে, খাচ্ছে। কিন্তু কী খাচ্ছে? এসব দোকানের খাবার নিম্নমানের।
অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে এসব খাবার তৈরি করা হয়।
স্ট্রিট ফুড বা রাস্তার খাবার নামে পরিচিত এসব খাবার সারা বিশ্বেই পরিচিত ও জনপ্রিয়। কিন্তু উন্নত দেশের স্ট্রিট ফুড স্বাস্থ্যসম্মত, উপাদেয় ও আকর্ষণীয় হয়। বাংলাদেশে রাস্তায় যেসব খাবার তৈরি ও বিক্রি হয় তা বিশুদ্ধ, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। সাধারণত সস্তা, তৈলাক্ত ও ঝাল হওয়ার কারণে রাস্তার খাবারের বেশ কদর রয়েছে। খেতে উপাদেয় বা মুখরোচক হলেও দেশের এসব স্ট্রিট ফুড অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি ও পরিবেশন করা হয় বলে বিভিন্ন জটিল ও মারাত্মক রোগ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকার প্রায় সব খাবারের দোকানে খাবার খোলা আকাশের নিচে উন্মুক্ত অবস্থায় তৈরি, বিক্রি ও সাজিয়ে রাখা হয়। এসব খাবার ধুলাবালি, পোকামাকড় ও মাছি দ্বারা দূষিত হয়।
বাংলাদেশে প্রায় ১৩০ পদের রাস্তার খাবার পাওয়া যায়। রাস্তার খাবারের পুষ্টিগুণ থাকে অতিসামান্য এবং শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব থাকে অনেক বেশি।
অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন কাপড়চোপড় পরে ময়লা ও জীবাণুযুক্ত হাতে রাস্তার খাবার তৈরি করা হয় বলে এসব খাবার খাওয়া ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। রাস্তার খাবার তৈরিতে প্রায়ই ব্যবহার করা হয় দূষিত পানি। খাওয়ার পানিও বিশুদ্ধ থাকে না। ফিল্টার করা পানি ব্যবহার করা হয় না বলে পানিতে ই-কোলাই ও প্রটিয়াস বেসিলাস-জাতীয় জীবাণু থাকে। যেসব থালাবাসন বা পাত্রে খাবার পরিবেশিত হয়, সেগুলোতে প্রায়ই ক্ষতিকর জীবাণু থাকে। রাস্তায় তৈরি খাবারে অনেক সময় নিষিদ্ধ উপকরণ ও রং ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
২০১৫ সালে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, রাজধানী ঢাকার ৫৫ শতাংশ পথ-খাবারে নানা ধরনের জীবাণু রয়েছে। বিক্রেতাদের ৮৮ শতাংশের হাতেই থাকে নানা জীবাণু। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বা আইসিডিডিআরবির গবেষকরাও বিক্রেতার কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে দেখেছেন বেশির ভাগ খাবারে প্রচুর জীবাণু রয়েছে। গবেষকরা বলছেন, প্রায় ৯০ শতাংশ বিক্রেতার হাতেই জীবাণু থাকে।
একমাত্র সচেতনতাই পারে আমাদের নীরোগ রাখতে। ঝুঁকিমুক্ত থাকতে রাস্তার মানহীন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।