কাজিরবাজার ডেস্ক :
জ্বালানির বিশ্ববাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত এলএনজি কেনার নতুন চুক্তিতে যেতে চায় না পেট্রোবাংলা। জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলা সূত্রে এ খবর জানা গেছে। এলএনজি আমদানিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন পড়ায় সরকার ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেছে। যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে, তার তুলনায় গ্যাস বিক্রি থেকে সরকার খুব অল্প পরিমাণ অর্থ পাচ্ছে। সঙ্গত কারণেই অন্যান্য খাতের ভর্তুকি জ্বালানিতে যোগ করতে হচ্ছে। যা সার্বিক রাষ্ট্র পরিচালনার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
চলতি বছর স্পট মার্কেটে ৩০ থেকে ৫০ ডলারের মধ্যে প্রতি এমএমবিটিউ (প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) এলএনজির দাম ওঠানামা করেছে। যেখানে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজির দাম পড়ে ১২ থেকে ১৪ ডলার।
এখন এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি ক্ষমতার অর্ধেকও ব্যবহার করা হচ্ছে না। দৈনিক এলএনজি থেকে ৮০০ থেকে ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হলেও এখন তা ৪৫০ থেকে ৪৮০ মিলিয়ন ঘনফুটে নামিয়ে আনা হয়েছে। স্পট মার্কেটে দাম বৃদ্ধির পর সরকার এলএনজি আমদানিতে ভর্তুকি কমিয়ে দিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে এজন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে শিডিউল লোডশেডিং করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরাও জ্বালানির ব্যয় কমানোয় সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, দেশের একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিদেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এলএনজি বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাইও করেছে পেট্রোবাংলা। তবে এদের সবার দামই আকাশছোঁয়া। অনেকে স্পট মার্কেট থেকেও বেশি দামে এলএনজি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে।
পেট্রোবাংলা বলছে, এখন যেহেতু বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বেশি, তাই রফতানিকারকরাও বেশি দাম হাঁকছে। আগামী শীতে এলএনজির চাহিদা বেড়ে গেলে দাম আরও বাড়বে। শীতের পর দাম কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তখন এলএনজি আমদানির নতুন চুক্তির বিষয়ে সরকার চিন্তা করবে। তবে দেশের প্রভাবশালী একটি কোম্পানি এলএনজি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবটি সরকার যাচাই-বাছাই করে রেখেছে। যদিও দর নির্ধারণের বিষয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়ায় এখনও চুক্তি হয়নি। এছাড়া কাতার ও ওমানের সঙ্গেও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাতে তারা ২০২৫ সালের আগে আর এলএনজি দিতে আগ্রহ দেখায়নি।
জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, অনেক দেশ থেকেই এলএনজি কেনার প্রস্তাব পেয়েছি আমরা। কিন্তু বিশ্ববাজারে এলএনজির যে দাম তাতে এই মুহূর্তে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। তিনি জানান, এর বাইরে আমরা কাতার ও ওমানের সঙ্গেও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আলোচনা করেছিলাম। তারা ২০২৫-এর আগে আর দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে।
চেয়ারম্যান বলেন, আমরা দাম কমার অপেক্ষায় আছি। শীতকালে এমনিতেই আমাদের বিদ্যুতে গ্যাসের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। সেই গ্যাস আমরা তখন শিল্পে সরবরাহ করতে পারবো।