মুদ্রা পাচার রোধ

11

প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে সহজে বৈধ পথে দেশে অর্থ পাঠাতে পারেন সে জন্য সরকার অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে। বৈধ পথে অর্থ পাঠানোকে উৎসাহিত করার জন্য ২.৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এর পরও হুন্ডি কারবারিদের থামানো যাচ্ছে না। প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর পাশাপাশি তাঁরা মোবাইল ব্যাংকিং বা ডিজিটাল অর্থ লেনদেন ব্যবস্থার সুযোগও নিচ্ছেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) গত বুধবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অর্থ পাচার চক্রের ১৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই ডিজিটাল ব্যবস্থায় হুন্ডির মাধ্যমে গত এক বছরে দেশ থেকে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন বিকাশ এজেন্ট, তিনজন বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসার এবং তিনজন বিকাশ ডিএসএস রয়েছেন। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮০ টাকা, চারটি সিমে তিন কোটি ৪৬ লাখ ৪৭ হাজার ২২৯ ইলেকট্রনিক মানি এবং ৩৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় চারটি মামলা করেছে সিআইডি।
অর্থপাচারের এমন তথ্য দেশের জন্য সুখকর নয়। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতি বা রিজার্ভের কাক্সিক্ষত অবস্থান রক্ষায় প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রবাস আয়ের প্রবাহ কমে গেলে রিজার্ভে ঘাটতি দেখা দেবে। আমদানি বাধাগ্রস্ত হবে। দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে। তাই যেকোনো মূল্যে রেমিট্যান্স প্রবাহের ক্ষতি রোধ করতে হবে। আবার জঙ্গিবাদসহ নানা ধরনের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডেও পাচার করা অর্থ ব্যবহৃত হতে পারে। সিআইডি এ ক্ষেত্রে যে কাজটি করেছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা আশা করি, অর্থপাচার রোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্য সংস্থাও তাদের কাজের পরিধি বাড়াবে এবং দেশ থেকে মুদ্রাপাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।