মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
এক পা কলসিতে ঢুকানো, গলা এবং কোমরে রশি বাঁধা। সেই রশির এক মাথা দিয়ে একটি ড্রামের সঙ্গে বাঁধা গৃহবধূর দ্বিতীয় পা। মাথার চুলগুলো উপরের দিকে ভাসছিলো।
ছোট ছেলে মায়ের এই অবস্থা দেখে চিৎকার দিতে থাকে। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন জড়ো হন। খবর যায় রাজনগর থানায়। পুলিশ গিয়ে গৃহবধূ মিনা বগেমের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার সকালে রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীচক গ্রামে। মিনা বেগমের বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি- এটি হত্যাকাণ্ড।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীচক গ্রামের কলিমুল্লাহর ছেলে লেচু মিয়া ওরফে লেইছ মিয়ার সঙ্গে তার স্ত্রী মিনা বেগম (৪০) পারিবারিক কলহ চলছিল। এ নিয়ে মিনা বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের পাবই গ্রামে চলে যান। সেখানে বেশ কিছুদিন ছিলেন। বিষয়টি স্থানীয় মুরুব্বি ও ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান মিলে মিমাংসা করে দেন ১০/১২ দিন আগে। বিরোধ মিটে যাওয়ায় ওই সময়ই মিনা বেগম স্বামীর বাড়ি মৌলভীচক গ্রামে চলে যান। কিন্তু বুধবার সকালে মিনা বেগমের ছেলে হুমায়ূন ঘুম থেকে উঠে মা কে না পেয়ে পুরো বাড়ি খুঁজে। কোথাও না পেয়ে পুকুরঘাটে গিয়ে দেখে মায়ের ভাসমান লাশ। এ সময় তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন জড়ো হন। বিষয়টি রাজনগর থানার পুলিশকে জানালে তারা গিয়ে লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের সময় দেখা যায়- এক পা একটি কলসির মধ্যে ঢুকানো। গলা ও কোমরের সঙ্গে রশি বাঁধা। আর একটি ড্রাম অপর পায়ের সঙ্গে বাধাঁ।
পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড ধারণা করা যাচ্ছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করার সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও ইউপি সদস্য মো. মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
রাজনগর থানার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিনা বেগমের স্বামী লেচু মিয়া ওরফে লেইচ মিয়া ও তার মা এবং ৩ সন্তানকে থানায় নিয়ে যায়। এঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
ইউপি সদস্য মো. মাহবুবুর রহমান বেলেন, মিনা বেগম ও তার স্বামীর মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল। সম্প্রতি বিষয়টি আমিসহ স্থানীয় মুরুব্বিরা মিলে মিমাংসা করে দেন। ওই সময় মিনা বেগম স্বামীর বাড়িও চলে আসেন। এরই মাঝে আজেকর ঘটনা ঘটল।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রতন দেবনাথ বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পূর্বে বিরোধ ছিল। বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গিয়েছিল। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে- তাকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার মর্গে পাঠিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামীকে আটক করা হয়েছে। এখনো মামলা হয়নি।