জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ভয়াবহ আগুনে এক অসহায় পরিবারের গবাদিপশু সহ সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামে। আগুনে সবকিছু হারিয়ে কান্না থামছে না অসহায় পরিবারের। তাদের শান্তনা দেয়ার ভাষা কারো নেই। এ ঘটনায় সর্বত্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
২৯ আগষ্ট সোমবার ভোররাতে নারিকেলতলা গ্রামের অসহায় পরিবারের বাসিন্দা জহির মিয়ার বাড়িতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহাল শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ঘুমন্ত পরিবারের লোকজন কোন রকমে নিজেরা বাঁচতে পারলেও তাদের ঘরে থাকা কোন মালামাল রক্ষা করতে পারেননি। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনী গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। ততক্ষণে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়া জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ও রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ছদরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান, একমাত্র জহির মিয়ার উপার্জনের উপর নির্ভরশীল তার পরিবার। পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন তুলে দিতে জহির মিয়া কখনো কৃষক, কখনো গাড়িচালক, কখনো দিনমজুর। এক কথায় সে যখন যে কাজ পায়, তা করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। সেই অসহায় পরিবারের এমন ক্ষতি কেউ মেনে নিতে পারছেন না।
ক্ষতিগ্রস্ত জহির মিয়া বলেন, কেউ শত্রুতার কারণে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে আমাদের পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল। ভোররাতে হঠাৎ আগুনের তাপে আমার ঘুম ভেঙে যাওয়ায় পরিবারের সকল মানুষকে বাঁচানো গেছে। তা না হলে আমরা সহ পুড়ে মরতাম। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ছোট ৫টি পুরনো টিনসেড ঘর, বাচ্চা সহ ৬টি ভেড়া, ১টি পুরনো ট্রাক্টর, ১টি পানির মেশিন, ১টি হাওয়ার মেশিন, নগদ টাকা, ধান, চাল, হাঁস-মোরগ, কাপড়-ছোপর সহ যা কিছু ছিল সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যা আমার ও আমার পরিবারের মানুষের সারা জীবনের অর্জন ও সম্পদ ছিল। এর মধ্যে আমার এক ভাই মানসিক রোগী। এখন ঘর নেই, খাবার নেই, কাপড় নেই। কি করে চলবো বুঝতে পারছি না। সকালে গ্রামের অন্য মানুষ আমাদের একবার খাবার দিয়েছেন। পরিধানের জন্য দিয়েছেন পুরনো কাপড়। এমতাবস্থায় মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী-সন্তান সহ ১২ জন মানুষকে নিয়ে বিপদে পড়েছি। তাই সরকার সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।