২০২৩ সাল থেকে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম ॥ কর্মদিবস ১৮৫ দিন ॥ শিক্ষা বছর ১৮০ দিন

218

কাজিরবাজার ডেস্ক :
২০২৩ সাল থেকে চালু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম। এ কার্যক্রমে কর্মদিবস হবে মাত্র ১৮৫ দিন। এক বছরে ছুটি ৭৬ দিন। শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে আরও ১০৪ দিন। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, জাতির পিতার জন্ম দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শোক দিবস এবং বিজয় দিবস রয়েছে। সরকারী ছুটির ৫ দিন কর্মদিবসে অন্তর্ভুক্ত করায় প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা বছর শেষ হবে ১৮০ দিনে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউরোপের দেশগুলোতে ১৮১ দিনে শিক্ষা বর্ষ শেষ হয়। প্রতিবেশী দেশ ভারতে রাজ্যভেদে ১৮০-২০০ দিনে শিক্ষা বছর শেষ করা হয়। ২০২৩ সাল থেকে চালু হওয়া চতুর্মাত্রিক এ শিক্ষাক্রম শেষ করা সম্ভব ১৮০ দিনেই। কিন্তু তার জন্য দরকার প্রশিক্ষিত শিক্ষক। উপযুক্ত শিক্ষক তৈরি করা গেলেই শিক্ষা ব্যবস্থায় যেমন গতি আসবে পড়াশোনার মানেরও বড় পরিবর্তন হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য অধ্যাপক মোঃ মশিউজ্জামান বলেন, আমাদের যে কারিকুলাম চলছে সে বিবেচনায় শিক্ষা কর্মদিবস কমছে না। আগে প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িকীর জন্য ২৬ দিন পরীক্ষা নেয়া হতো। এসএসসি পরীক্ষার জন্য ৩৩ কর্মদিবস লাগত। এখন এসএসসি পরীক্ষা ১০ বিষয়ে হওয়ায় তা ১০ দিনেই শেষ হয়ে যাবে। বিষয় ও বিভাগ না থাকায় কোন শিক্ষা দিবসের অপচয় হচ্ছে না। নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পরীক্ষা না থাকায় শিক্ষার্থীদের কর্মদিবস কমছে না।
জাতীয় ৫ কর্মদিবসের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন বাচ্চারা বাসায় থাকে। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে এইসব দিবসে শিক্ষার্থীরা ফুলের তোড়া বানাবে। যে গান গাইতে পারে সে গান গাইবে। কেউ শৃঙ্খলা দেখভাল করবে। এরমধ্যেও শিখন এ্যাসেসমেন্ট করা হবে। কিন্তু যেটা হবে তা হলো আগে শিক্ষার্থীদের ৩০০ শব্দের শহীদ দিবসের রচনা মুখস্ত করতে লাগত। এই ধরনের কর্মে শিক্ষার্থীর সরাসরি সম্পৃক্ততার কারণে তা নিজের মধ্যে ধারণ করবে। ফলে শিক্ষার্থীর মননে চেতনা তৈরি হবে।
প্রাক-প্রাথমিকে ৫০০ মাধ্যমিকে ১১৫০ শিখন ঘণ্টা : জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রমে, শিক্ষার্থী বিভিন্ন কৌশলে শ্রেণীকক্ষে, বিদ্যালয়ে, বাড়িতে, নিকট পরিবেশে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিখন সম্পন্ন করবে। শিখন কার্যক্রম পরিচালনা শুধু শ্রেণীভিত্তিক হবে না। শ্রেণীকক্ষের বাইরেও চলবে লেখাপড়া।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো বলছে, শিক্ষায় কনটাক্ট পিরিয়ড বলতে শ্রেণীকক্ষ ও শ্রেণীকক্ষের বাইরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের মধ্যে সক্রিয় শিখন সময়কে ধরা হয়। ইন্সট্রাকশনাল সময় বলতে শ্রেণীকক্ষে বা ভার্চুয়ালি শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছ থেকে সহায়তা পেয়ে থাকে। লার্নিং টাইম হচ্ছে যখন শিক্ষার্থীরা সক্রিয় কোন শিখন কাজে মগ্ন। বাংলাদেশের নতুন শিক্ষাক্রমে এই ধরনের শিখন পদ্ধতিগুলোকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রমের খসড়া থেকে জানা যায়, ১৮৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ৫০০ শিখন ঘণ্টা থাকবে। ১ম-৩য় শ্রেণীর জন্য ৬৩০ শিখন ঘণ্টা, ৪র্থ-৫ম শ্রেণীর জন্য ৮৪০ শিখন ঘণ্টা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে ষষ্ঠ-৮ম শ্রেণীর শিখন ঘণ্টা হাজারের ওপরে ১০৩০ ঘণ্টা। ৯ম-১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য শিখন ঘণ্টা ১১০০ ও একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য তা ১,১৫০ শিখন ঘণ্টা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউনেস্কো অন্তর্ভুক্ত অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) দেশগুলোর ১ম-৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের গড় শিখন ঘণ্টা ৭৯৯। এসব দেশের ষষ্ঠ- ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের শিখন ঘণ্টা ৯১৯। ইউরোপের ২৩ দেশে গড় স্কুল দিবস ১৮১ দিন। প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের স্কুলের কর্মদিবসও ভিন্ন। যেমন মেঘালয়ে ১৯২ দিন। মহারাষ্ট্রে ২০০ দিন। এক্ষেত্রে এনসিটিবির দাবি দেশের নতুন যে শিক্ষাক্রম সে অনুযায়ী ১৮৫ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলবে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মানের।
বিষয়ভিত্তিক শিখনের শতকরা হার ও ঘণ্টা : ওইসিডি ও সহযোগী দেশগুলোতে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের জন্য মাতৃভাষা, গণিত ও শিল্পকলা বিষয়ে মোট শিখন সময়ের ৫২ ভাগ বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরে মাতৃভাষা, বিদেশী ভাষা ও গণিতে ৪২ ভাগ সময় বরাদ্দ থাকে। বাংলাদেশের নতুন শিক্ষাক্রমেও এমন সময়ই রাখা হয়েছে।
২০২৩ সাল থেকে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক্-প্রাথমিক স্তরের শিশুদের সবচেয়ে বেশি সময় পড়ানো হবে মাতৃভাষা বাংলা। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শতকরা বিবেচনায় ২৫ ভাগ সময় হিসেবে ১২৫ ঘণ্টা পড়ানো হবে এই বিষয়ে। গণিত বিষয়ে এই স্তরের শিক্ষার্থীদের পড়ানো হবে ১০০ ঘণ্টা। শতকরা হিসেবে যা মোট শিখন সময়ের ২০ ভাগ। বিজ্ঞানে ৫০ ঘণ্টা ও সামাজিক বিজ্ঞানেও ৫০ ঘণ্টা ধরা হয়েছে। অন্যদিকে শিল্প ও সংস্কৃতিতে ৭৫ ঘণ্টা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষায় ৬০ ঘণ্টা এবং ধর্ম বিষয়ে ৪০ ঘণ্টা শিশুদের পাঠদান করানো হবে।
প্রাথমিক স্তরে ১ম-৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাংলা বিষয়ে পড়ানো হবে ১৭৬ ঘণ্টা, শতকরা বিবেচনায় যা ২৮ ভাগ। তবে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পড়ানো হবে ১৬৮ ঘণ্টা শতকরা হারে তা মাত্র ২০ ভাগ। অন্যদিকে ১ম-৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ইংরেজী বিষয় পড়ানো হবে ৫০ ঘণ্টা। তবে এসব শিক্ষার্থী যখন চতুর্থ ও ৫ম শ্রেণীতে ওঠবে তাদের এই বিষয় পড়তে হবে দ্বিগুণেরও বেশি সময়। একইভাবে গণিতের জন্য শিখন ঘণ্টা ১ম-৩য় শ্রেণীর জন্য ১১৩, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর জন্য ১৩৪। ১ম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর জন্য ধর্ম বিষয়ে শিখন ঘণ্টা কমলেও ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীতে এই বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হবে ৫০ ঘণ্টা।
মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪৫ ভাগ সময় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ইংরেজী, সামাজিক বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে আবশ্যিক বিষয়ে মোট শিখন সময়ের ২৫ ভাগ সময় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ৩টি বিশেষ বিষয়ের জন্য বাকি সময় রাখা হয়েছে। এছাড়াও একটি ঐচ্ছিক ও প্রায়োগিক বিষয়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সময় বরাদ্দ করবে।
শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রধান চ্যালেঞ্জ : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষক প্রশিক্ষণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনসিটিবি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) কাজ করছে।
এনসিটিবি বলছে, শিক্ষক প্রশিক্ষণে শুধু পরিকল্পনায় নয় মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে। গত দু’সপ্তাহে ৬৪ জেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। গত ২২-২৪ আগস্ট সারাদেশের উপজেলা পর্যায়ের ৫২০ জন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ৯টি অঞ্চলে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। এর পর বাকি কাজটা মাউশি, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর করবে।
এনসিটিবি সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য ৬০০ কোটি টাকার বাজেট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এই অনুসারে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম পরিচালনা করবে মাউশি। এখন তিন অধিদফতরের শিক্ষকদের একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে কে কোন বিষয় পড়াবেন এ বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরের ১৭-২২ তারিখ পর্যন্ত ৫ দিন চার লাখ ২০ হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণের জন্য বলেছি। এর আগে প্রত্যেক জেলায় ৩ জন মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হবে। এই তিনজন মাস্টার ট্রেইনার উপজেলা পর্যায়ে আবার ৩জন মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করবেন। ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে।
ভিন্নরূপে পাবলিক পরীক্ষা ও মূল্যায়ন : শেখার চেয়ে নম্বর পাওয়ার প্রতিযোগিতা ঠেকাতে দশম শ্রেণী শেষ করে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেবে শিক্ষার্থীরা। দশম শ্রেণীর ১০টি বিষয়ের মধ্যে ৫টি বিষয়ে (বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান) সামষ্টিক ও শিখনকালীন মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন করা হবে। ৫টি অবশিষ্ট বিষয়ে জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, ধর্ম শিক্ষা ও শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে বিদ্যালয়ে শিখনের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বছর শেষে পাবলিক পরীক্ষায় বসতে হবে। তবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার সম্মিলিত ফলের ভিত্তিতে ফল ঘোষণা করা হবে। এ পর্যায়ে ৩টি আবশ্যিক বিষয়ে ৩০ ভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৭০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। ৩টি নৈর্বচনিক বা বিশেষায়িত বিষয়ে কাঠামো ও ধারণা অনুযায়ী সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি প্রজেক্টভিত্তিক মূল্যায়ন ও অন্যভাবে শিখনকালীন মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। এছাড়াও প্রায়োগিক একটি বিষয়ে হাতে-কলমে কাজের বিনিময়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে।
বদলে যাচ্ছে সনদ ব্যবস্থা : একটি কার্ডে নম্বর চিরায়ত। এই ঘরানার সনদ ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটছে নতুন শিক্ষাক্রমে। প্রচলিত নম্বরভিত্তিক রিপোর্ট কার্ডের পরিবর্তে বর্ণণামূলক বহুমাত্রিক রিপোর্ট কার্ডের ব্যবস্থা হবে। এই রিপোর্ট জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ বিকাশের অবস্থা কার্ডে দেয়া থাকবে। শিক্ষা কার্ডের মাধ্যমে মূলত পরিবারের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। এই কার্ডের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীর উন্নতিতে পরিবার ও স্কুল-কলেজ যৌথ উদ্যোগ নিতে পারবে। শ্রেণীশিক্ষক সরাসরি অভিভাবকের কাছে এই রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরবেন ও করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক রিপোর্ট কার্ড ও পাবলিক পরীক্ষার রিপোর্ট কার্ড নতুন আঙ্গিকে প্রচলন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির সহায়তাও নেয়া হতে পারে যেন মূল্যায়ন ও রিপোর্ট নিরপেক্ষ হয়।
নতুন শিক্ষাক্রমের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষা মানে শুধুই শ্রেণীকক্ষের শিক্ষা নয়। এই শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতি, ক্রীড়া, মন-মানসিকতার পরিবর্তন যুক্ত হলে ৬ দিন ক্লাস করার কোন প্রয়োজন হয় না। উন্নত বিশ্বে শিক্ষার্থীরা একদিন ক্লাস করে অন্যদিন কেউ সঙ্গীত শেখে, কেউ ছবি আঁকে। পরদিন দেখা যাচ্ছে তারা লাইব্রেরি ওয়ার্ক করে। মূলত আধুনিক বিশ্বের যে পাঠ্যক্রম সেটাকে কিছুটা কাটছাঁট করে দেশের বাস্তবতায় অনুশীলন করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের আরও বেশি কর্তব্যনিষ্ঠ হতে হবে। শিক্ষক ও ছাত্রের যে দূরত্ব তা যদি কমিয়ে আনা যায় তাহলে যে পরিবর্তন হচ্ছে তার সঙ্গে শিক্ষার্থীরা খাপ খাওয়াতে পারবে।
তিনি বলেন, সমস্যা একটি জায়গায় তা হচ্ছে মেধাবী ও যারা শিক্ষকতা করতে আগ্রহী তাদেরকে এই পেশায় আনা যাচ্ছে না। অর্থাৎ শিক্ষকতা পেশাকে সেভাবে আকর্ষণীয় করা হচ্ছে না। মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী যারা সুযোগ পেলে আসতেন তারা দেখা যাচ্ছে সরকারী করণিক চাকরিতেও আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। কারণ সেখানে বেতন-ভাতা খারাপ নয়। এর সঙ্গে আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা তারা পান। আমাদের এখন উচিত শিক্ষকতা পেশাকে গুরুত্ব দিয়ে স্বীকৃতি দেয়া। এখানে সুযোগ-সুবিধা ও বেতন ভাতা বাড়ানোর তাগিদ দিতে হবে। ভাল শিক্ষক ছাড়া ভাল শিক্ষাব্যবস্থা কল্পনা করা যায়না। সরকারী চাকরিজীবীদের মতো শিক্ষকদের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে সরকারের সুদৃষ্টি দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।