কোনোভাবেই সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। কত পরিবার যে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে নিঃস্ব হয়ে গেছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। আবার দেশের সড়ক-মহাসড়কে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলোকে দুর্ঘটনা না বলে হত্যাকাণ্ডও বলা যায়।
সড়ক দুর্ঘটনায় মূল্যবান প্রাণহানিকে শুধু দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার কোনো কারণও নেই।
গত সোমবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়ক দুর্ঘটনার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, জুন মাসে সারা দেশে ৪৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮২১ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুন মাসে ১৯৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৪ জন নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ৩৮.৯৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২.১৮ শতাংশ।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা আমাদের সড়ক-মহাসড়কের জন্য এক দুর্ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কোনো দিন নেই যে দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে না। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত চালক ও আরোহীদের মধ্যে ৫১.৪২ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর। এই তথ্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত চালকের আসনে কিশোর, তরুণদের একটু বেপরোয়া ভাব পরিলক্ষিত হয়। এই তরুণদের বেশির ভাগেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। অথচ অভিভাবকরা তাদের হাতে মোটরসাইকেল তুলে দিয়েছেন।
আমাদের দেশে চালকদের বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা। তাঁদের অনেকেই আধুনিক সড়ক নির্দেশনা বুঝতে অক্ষম। ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। গাড়িচালকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অন্তত এসএসসি নির্ধারণ করার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। পাঠ্যপুস্তকে ট্রাফিক আইন ও নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। আদালতের সেই নির্দেশনা কি মানা হচ্ছে? মালিকরা চালকের দক্ষতা, কল্যাণ ও শৃঙ্খলার প্রতি উদাসীন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঈদুল আজহাকে ঘিরেও সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে দেশের গণপরিবহন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে সড়কে।