ভালো নেই গভীর সমুদ্রে ইলিশ আহরণকারী বাগেরহাটের শরণখোলার ট্রলার মালিক ও মহাজনরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন তাঁরা। তিন-চার বছরে প্রায় অর্ধশত ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ী ঋণের চাপ ও লোকসানে দেউলিয়া হয়েছেন। দেনাগ্রস্ত হয়ে কম দামে বিক্রি করে দিয়েছেন জাল-ট্রলার ও শেষ সম্বল বসতভিটা।
অনেকে নিরুদ্দেশ হয়েছেন বলেও খবরে প্রকাশ। অনেকের লাখ লাখ টাকা মূল্যের জাল-ট্রলার ঘাটে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত তিন-চার বছরে মৌসুমের শুরু থেকেই কয়েক দফা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, করোনা প্রভাব আর মৌসুমের অর্ধেক সময় নিষেধাজ্ঞা চলায় ব্যবসায় ধস নামতে থাকে। অনেকে কোনো উপায় না পেয়ে অল্প দামে জাল-ট্রলার বিক্রি করে কিছু দেনা শোধ করেন। শরণখোলার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে এক আড়তদার জানিয়েছেন, তাঁর ছয়টি ট্রলারের মধ্যে এ বছর মাত্র দুটি ট্রলার সাগরে গেছে। টাকার অভাবে অন্যগুলো পাঠাতে পারেননি। একেকটি ট্রলার সাগরে পাঠাতে তিন-চার লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয়েছে; কিন্তু তিন ট্রিপের মাছ বিক্রি করে তেলের দামও ওঠেনি।
এভাবে প্রত্যেক ট্রলার মালিক ও মহাজন লোকসানে রয়েছেন। একেকটি ট্রলার তিন লাখ থেকে চার লাখ টাকা খরচ করে সাগরে যায়। কিন্তু জাল ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই দুর্যোগ শুরু হয়। এ কারণে শূন্য হাতেই কূলে ফিরতে হয়েছে জেলেদের। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে এই ট্রিপে ভালো মাছ পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুর্যোগে তাঁদের চালান শেষ হয়ে গেছে। অনেকেরই এবার ধারদেনা করে ট্রলার সাগরে পাঠাতে হচ্ছে। অনেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও সাগরে কাক্সিক্ষত পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হওয়ায় কোনো ব্যবসায়ীই এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখতে পারেননি।
শরণখোলা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইলিশ উন্নয়ন ফান্ড নামের একটি তহবিল গঠনের প্রক্রিয়া সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে। এটি পাস হলে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তা করা সম্ভব হবে।
ব্যবসায়ীদের পাশে এখনই সাহায্য নিয়ে দাঁড়াতে হবে। মৎস্য ব্যবসায়ীদের তাঁদের পেশায় রাখতে সব ব্যবস্থা নিতে হবে।