পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন

8

গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এ দেশটা হবে কৃষক ও শ্রমিকের উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, লোভা, উৎমা ও শ্রীপুর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন, সংগ্রহ ও সরবরাহ করে অত্রাঞ্চলসহ দেশের প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এই পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন।
কোয়ারিগুলো থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কর্মহীন এ প্রান্তিক জনপদে আজ দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি। পাথর সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজ সর্বশ্বান্ত। হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু করে আজ দেউলিয়া। পাথর কোয়ারী বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষের জীবন জীবিকার উপর যে মারাত্মক দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা অবর্ণনীয়। একটি বৃহৎ অঞ্চলের ১০ লক্ষাধিক মানুষের প্রাচীন এ জীবিকা বন্ধ হওয়ায় এর অর্থনৈতিক ক্ষতি হাজার হাজার কোটি টাকা। পাথর পরিবহনে সম্পৃক্ত হাজার হাজার ট্রাক ও ট্রাক্টর মালিক, শ্রমিক রোজগার বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পাথরকে উপজীব্য করে গড়ে ওঠা স্থানীয় বিভিন্ন হাট বাজার ও বিপনী কেন্দ্রগুলোতে পণ্য কেনা বেচা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজারো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা কঠিন ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন।
পাশাপাশি বক্তারা আরও বলেন পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় শুধু পরিবহন শ্রমিক নয়; হাজার হাজার বারকি ও ক্রাশার শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। এদিকে দেশের অর্থনীতির এ ক্রান্তিকালে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে পাথর আমদানী করা হচ্ছে, এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অপচয় হচ্ছে। সিলেটের পাথর কোয়ারীগুলো খুলে দিলে একদিকে যেমন বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে অপরদিকে সিলেটের লাখো মানুষের জীবীকার পথ সুগম হবে।
যুগ যুগ ধরে পাথর আহরণের মাধ্যমে কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের পথ পাথর কোয়ারিগুলো সনাতন পদ্ধতিতে সচল করে দেয়ার জোর দাবি জানান তারা।
অন্যথায় ন্যায্য এ দাবি আদায়ের স্বার্থে প্রয়োজনে সিলেটে অবরোধ-ধর্মঘটের মত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে মত বিনিময় সভা থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সিলেটের পাথর কোয়ারী সমূহ খোলে দিয়ে লাখো মানুষের জীবন জীবীকা রক্ষার সুযোগ করে দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান।
বৃহত্তর সিলেট পাথর ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দের সাথে জাফলংয়ের পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতৃবৃন্ধের এক যৌথ সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথা গুলো বলেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে জাফলং-বল্লাঘাট পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান আনু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শামিম পারভেজ’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম হাদী ছয়ফুল। সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দিলু মিয়া, কার্যকারী সভাপতি ছালাম মিয়া, সাধারণ সম্পাদক গফুর মিয়াসহ সিলেটের পাথর সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।