স্টাফ রিপোর্টার :
সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় চির নিদ্রায় শায়িত হলেন বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক গণপরিষদ সদস্য এডভোকেট লুৎফুর রহমান। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে সিলেট নগরীর মানিকপীরস্থ টিলায় দাফন করা হয়।
এর আগে বেলা আড়াইটায় মরহুমের নামাজে জানাযা অনুষ্টিত হয় নগরীর আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে। জানাযার নামাজের পূর্বে সেখানে সিলেটের প্রসাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। জানাযার নামাজে ইমামতি করেন সিলেটের বিশিষ্ট আলেম হযরত মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি।
এদিকে জুম্মার নামাজের পরপরই জানাযার স্থল সিলেট ঐতিহাসিক আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এক জনসমুদ্রে পরিণত হয়। হাজার হাজার মানুষ এডভোকেট লুৎফুর রহমানের জানাযায় উপস্থিত হতে দেখা গেছে। আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানকসহ দলের কেন্দ্রীয় ও সিলেটের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠন, প্
রশাসনসহ হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন এই জানাযার নামাজে।
এর আগে শুক্রবার বেলা ১১টায় তাঁর মরদেহ সিলেট জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নিয়ে আসলে এক আবেগঘন ও শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সিলেটের বর্ষিয়ান এ রাজনীতিবিদকে শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য ভিড় করেন সবাই।
এ সময় দেখা যায়, সকাল থেকে হওয়া গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে লুৎফর রহমানের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ঢল নামে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের। এছাড়াও সাধারণ মানুষজন লুৎফুর রহমানের মরদেহবাহী কফিনে জানান ফুলেল শ্রদ্ধা। সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীসহ নানা পেশার মানুষ যোগ দেন শোকজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে। এ সময় শোক জানাতে আসা অনেক মানুষের পরনে ছিল শোকের প্রতীক কালো পাঞ্জাবি। জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের পাশাপাশি বিভিন্ন অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিনম্র শ্রদ্ধায় তার কফিনে ফুল দিয়ে শোক জানান।
উপস্থিত বক্তব্যে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে আগত নেতাকর্মীরা বলেন, এডভোকেট লুৎফুর রহমানের মতো প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদকে হারানো সিলেটের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতির বিষয়। তাঁর অভাব সহসাই পুরণ হওয়ার নয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে এডভোকেট লুৎফুর রহমান নগরীর নয়াসড়কস্থ মাউন্ড এডোরা হসপিটালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালের তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ১ মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এর তিন দিন আগে সিলেটের বর্ষিয়ান এ রাজনীতিবিদ হঠাৎ
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লে তাঁকে মাউন্ড এডোরা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় নেয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এই হাসপাতালেই তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এডভোটেক লুৎফুর রহমানের গ্রামের বাড়ি ওসমানীনগর থানার বড় হাজিপুর গ্রামে। নগরীর আম্বরখানার বড়বাজারস্থ বাসায় তিনি বসবাস করতেন।