করোনা মহামারির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কৃচ্ছ্রসাধনের যে নীতি সরকার গ্রহণ করেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার দুই নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। অর্থ বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহার ২০ শতাংশ কমাতে হবে। অর্থাৎ গ্যাস-জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের ২০ শতাংশ ব্যবহার করা যাবে না।
ফলে পেট্রোল, অয়েল, লুব্রিক্যান্ট, গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। আর বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দের ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করতে হবে। এসব খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কোনো উপখাতে আবার যোগ করা যাবে না।
সরকারি গাড়ি যথেচ্ছ ব্যবহারের পাশাপাশি নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদেরও ব্যবহার করতে দেখা যায়। এসব গাড়ির জ্বালানির অর্থ জোগান দিতে হয় সরকারি কোষাগার কিংবা প্রকল্পের অর্থ থেকে। আরেকটি দিক হচ্ছে, বিভিন্ন প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পরও প্রকল্পের গাড়ি ফেরত না দেওয়া। যেকোনো প্রকল্পেই গাড়ি প্রয়োজন হতে পারে। নিয়ম হচ্ছে, প্রকল্প শেষে গাড়িগুলো যথা জায়গায় ফেরত দিতে হবে। এমন হতে পারে যে প্রকল্প শেষ হলেও গাড়ি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে ব্যবহার করতে হবে। শেষ হয়ে যাওয়া প্রকল্পের গাড়ি সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে ফেরত না দেওয়ার অর্থ বিধি-বিধান ভঙ্গ করা।
সরকারি গাড়ি যথেচ্ছ ব্যবহারের পাশাপাশি নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদেরও ব্যবহার করতে দেখা যায়। এসব গাড়ির জ্বালানির অর্থ জোগান দিতে হয় সরকারি কোষাগার কিংবা প্রকল্পের অর্থ থেকে।
সরকারি কর্মকর্তাদের অত্যধিক গাড়িবিলাস এবং গাড়ির জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ রাষ্ট্রের বিপুল অর্থের অপচয় নিয়ে অনেক দিন ধরেই পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে। সেই অপচয় রোধ করার লক্ষ্যে সরকার প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সেই গাড়ি পাওয়ার পরও সরকারি গাড়ির যথেচ্ছ ব্যবহার কমছে না।