জ্বালানি সংকটে বিদ্যুতের উৎপাদন কমিয়ে আনতে লোড শেডিংয়ে বাধ্য হচ্ছে সরকার। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে প্রতিদিন সূচি ধরে অন্তত এক ঘণ্টা করে বিদ্যুতের লোড শেডিং শুরু হয়েছে।
মানুষের যাতে সমস্যা কম হয়, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ যাতে পায়, সে জন্যই সূচি ঠিক করে এলাকাভিত্তিক লোড শেডিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় সম্ভাব্য লোড শেডিংয়ের সময় ধরা হয়েছে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে। সম্ভাব্য লোড শেডিংয়ের মোট পরিমাণ ধরা হয়েছে ১০০ মেগাওয়াটের মতো।
পাওয়ার সেলের তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ ১৫ হাজার মেগাওয়াট। সেই জায়গায় উৎপাদিত হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে এখন কয়লা থেকে ৭.৮৯ শতাংশ, গ্যাস থেকে ৫০.৮৪ শতাংশ, ফার্নেস অয়েল থেকে ২৮ শতাংশ এবং ডিজেল থেকে ৬ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের দাম বেশি হওয়ায় তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে গ্যাস সংকটেও বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোড শেডিং করার ফলে কিছুটা সাশ্রয় হবে, তবে খুব বেশি নয়। তাঁদের মতে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আছে, কিন্তু জ্বালানির অভাবে সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করা যাচ্ছে না। সমস্যাটা কোথায়? চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
অনেক দেশেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং লোড শেডিং করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ রাখতে হবে, দেশে রপ্তানিমুখী শিল্পসহ সামগ্রিকভাবে শিল্পোৎপাদন, সেচ সুবিধা এবং অতি জরুরি কিছু সেবা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বাংলাদেশে সাময়িকভাবে যে লোড শেডিং করা হচ্ছে, তা ভোক্তারা সহজভাবেই নিচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায় কিংবা লাগামহীন না হয়ে পড়ে, সে জন্য এখন থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আমরা আশা করি বিদ্যুতের এই সংকট দ্রুতই কেটে যাবে।