সিলেটে বন্যার্তদের পাশে পীর সাহেব চরমোনাই ॥ পৌঁছেনি সরকারি ত্রাণ, খাদ্যের অভাবে মানুষ হাহাকার করছে

14
লামাকাজী এলাকার বন্যা কবলিত মানুষদের নিয়ে গণদোয়া শেষে বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সিলেটে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নেই। সরকারি ত্রানের দেখা মিলছে না। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে কেউ ত্রাণ নিয়ে গেলে ক্ষুধার্ত মানুষগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, ভারত থেকে আসা পানির কারনে দেশে প্লাবন দেখা দিয়েছে। উত্তরবঙ্গের সব নদীগুলো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারেজের সব সুইচ গেইট খুলে দেওয়ার কারনে পানি ঢুকে সব কিছু প্লাবিত হচ্ছে। বানবাসী মানুষকে লাল সংকেত দেখিয়েস ঘরবাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছে। তারপরও সরকার বলে দিল্লি তাদের পরম বন্ধু। দিল্লীর কাছ থেকে পরামর্শ ও কৌশল শিখতে চায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা। এ সরকারকেও জনগণ একদিন লাল সংকেত দেখিয়ে নিরাপদে যেতে বললে, সেদিন আর বেশী দূরে নয়।
বুধবার (২২ জুন) সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, গণদোয়া ও ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসে পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সিলেট, সুনামগঞ্জে যখন বন্যা কবলিত মানুষজন যখন হাহাকার করছে, তখন হেলিকপ্টার দিয়ে ঘুরে আর এসির নিচে বসে দুই-একটি মুখরোচক কথা বলেই সরকার দায় এড়াতে চাইছে। ওই এলাকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশ সফর নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। তিনি গতকাল ১৩ দিনের লম্বা সফরে দেশ ত্যাগ করেছে। এতেই বুঝা যায়- এ সরকার কখনো মানুষের কল্যাণে কাজ করেনি। দুর্ভোগে থাকা মানুষদের সাথে সব সময় তামাশা করে যাচ্ছে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জনবিচ্ছিন্ন ও নির্বাসিত এ সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মানুষ এখন সোচ্চার হচ্ছে। সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। আওয়ামী লীগ সরসময় প্রচার করে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব কিন্তু কুমিল্লায় একজন সংসদ সদস্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি সেই সরকারের নির্বাচন কমিশন। কীভাবে তিনি ৩০০ আসনের প্রার্থী নিয়ন্ত্রণ করবেন। এটা ধোকাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
ভারতে রাসূল (স.) এর অবমাননা প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) কে নিয়ে ভারতে কটাক্ষ করা হলো। কিন্তু সংসদে একটি নিন্দা প্রস্তাব হলো না। মদিনা সনদে দেশ চলার কথা থাকলেও এখন ‘মুদি সনদে’ দেশ চলছে। আওয়ামী সরকার হোক বিএনপি হোক, তারা কেউই রাসূল (স.) কে অবমাননার বিরুদ্ধে মুখ খুলে নি। আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করে ক্ষমতায় থাকতে চাইছে, আর বিএনপি ভারতে গোলামী করে ক্ষমতায় যেতে চাইছে। তারা কেউই ইসলামের বন্ধু নয়। এদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কোন বিকল্প নেই।
পীর সাহেব চরমোনাই সুনামগঞ্জের গোবিন্দগঞ্জ ও সিলেটের লামাকাজী, হরিপুর এলাকার বন্যা কবলিত এলাকায় দোয়া মাহফিলে শরিক হয়ে অসহায় দুস্থদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন খান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতি দেলওয়ার হোসেন সাকি, ঢাকা মহানগনগর উত্তরের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আনোয়ার হোসেন, মুফতী ওয়ালীউল্লাহ কাসেমী, অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ডাঃ মুজিবুর রহমান, সহকারী দফতর সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ আলাউদ্দিন, সিলেট মহানগরের সভাপতি আলহাজ্ব নজির আহমদ, জেলা সভাপতি মুফতি সাঈদ আহমদ, মহানগর সহ সভাপতি ডা. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, জেলার সহ সভাপতি মাওলানা আমির উদ্দিন, জেলা সেক্রেটারী হাফিজ মাওলানা এমাদ উদ্দিন সহ জেলা ও মহানগ নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি