মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরাঞ্চলে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাওর পারের গ্রামগুলোতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন জনতা।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ অনেক বছর পর হঠাৎ করে আবার ডাকাত আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রাতে ২টি ছোট ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে ডাকাত দলকে নলুয়ার হাওরে দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়রা। এর মধ্যে দুই বাড়িতে হানা দিলেও স্থানীয় জনতার প্রতিরোধের মুখে পিছিয়ে যায় ডাকাত দল।
১৩ জুন সোমবার জগন্নাথপুর পৌর এলাকার শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক লুৎফুর রহমান বলেন, গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে হাওরে ডাকাত দলের আনাগোনা দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়রা। এতে হাওর পারের গ্রাম খালিকনগর, আলখানারপার, উত্তর ভবানীপুর, উত্তর রসুলপুর, কবিরপুর, চিলাউড়া, শেরপুর পশ্চিপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ডাকাত আতঙ্কে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। এর মধ্যে গত কয়েক দিন আগে রাতে শেরপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাশেম আলী ও তছকন আলীর বাড়িতে ডাকাতদল হানা দেয়। এ সময় বাড়ির মানুষের চিৎকারে আশপাশের বাড়ির লোকজন আসেন। এতে ডাকাতদল পিছিয়ে গেলেও আতঙ্ক কাটেনি। বর্তমানে ডাকাত আতঙ্কে মানুষ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। তিনি ধারণা করে বলেন, ডাকাতরা অন্য অঞ্চল থেকে নৌকাযোগে জগন্নাথপুর এসে হানা দিচ্ছে। তাই জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে হাওরে নৌকাযোগে রাতে পুলিশের টহল জোরদারের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ছমির উদ্দিন জানান, ডাকাতদের ভয়ে রাত হলে মানুষ ঘুমাতে পারেন না। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। কবিরপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আহমদ আলী জানান, চারদিকে ডাকাত আতঙ্কে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মানুষ। ১২ জুন রাত প্রায় ৩ টার দিকে আমার পাকা ঘরের দরজায় কে কারা হাক-ডাক করেছে। তবে ডাকাত ভয়ে আমি দরজা খুলতে সাহস পাইনি। চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান চৌধুরী সুফি মিয়া বলেন, আমাদের অঞ্চলে ডাকাত আতঙ্কের বিষয়টি শুনেছি। এখন আমি সিলেটে আছি। বাড়িতে এসে বিষয়টি ভালভাবে জেনে ডাকাত প্রতিরোধে সবাইকে নিয়ে অগ্রসর হবো। চিলাউড়া-হলদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল জানান, ১১ জুন রাতে চিলাউড়া গ্রামে ডাকাতদল হানা দিয়েছিল। তবে স্থানীয়রা হাক-ডাক দেয়ায় প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর থানার এসআই জিন্নাতুল ইসলাম তালুকদার জানান, ডাকাত আতঙ্কের বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো কোন ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। এর পরও জননিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিদিন রাতে হাওরে পুলিশের টহল অব্যাহত আছে। তবে এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষ করা গেছে, রাতে হাওরে জেলেদের আনাগোনা দেখা যায়। এতে জেলেদের নৌকা দেখেও ডাকাত আতঙ্ক দেখা দিতে পারে।