আসছে মাহেন্দ্রক্ষণ

5

বলা হয় মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। তবে কখনও সখনও মানুষ অতিক্রম করে যায় তার স্বপ্নকেও। যেমন হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত ও কাক্সিক্ষত পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের ২৫ জুন শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আপামর বাঙালির লালিত স্বপ্ন পদ্মা সেতুর। এদিন সকালে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠকন্যা। তথাকথিত দুর্নীতির ভুয়া অভিযোগে বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাহারের পর সমগ্র বাঙালি জাতির পক্ষে দেশের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা ও বাস্তবায়নকারী তিনি। সেতুটির প্রস্তাবিত নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ রাখার বিষয়টিও তিনি এক কথায় নাকচ করে দিয়েছেন। বলেছেন, পদ্মা সেতুর নাম হবে নদীর নামেই। শুধু পদ্মা সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবেই নয়, এর জন্যও তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন ইতিহাসে। দিনক্ষণ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে স্বভাবতই প্রমত্ত পদ্মার দুই তীরের অধিবাসীদের আনন্দ উৎফুল্ল উল্লাস যোগ করেছে বাড়তি মাত্রা, যাতে যোগ দিয়েছে দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশীরাও। অবশেষে দেশ ও জাতির স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে চলেছে সাজ সাজ প্রস্তুতি ও আয়োজন। গঠন করা হয়েছে ১৮টি উপকমিটি। চলছে শেষ পর্যায়ের ফিনিশিংয়ের কাজ। উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে এবং গাড়িতে সেতু অতিক্রম করে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে দুটো ফলক উন্মোচন করবেন। দুই প্রান্তে ৪০ ফুট উচ্চতার দুটি ম্যুরালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুটি প্রতিকৃতি থাকবে। এই সেতু নির্মাণের অগ্রদূত হিসেবে এগিয়ে এসেছেন দেশীয় প্রকৌশলীরাই। চীনের সহযোগিতায় নির্মিত এই সেতুর কাজ করোনা মহামারীর কারণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করা হলেও সেটি হয়নি। পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান যুগান্তকারী অবদান রাখতে সক্ষম হবে সুনিশ্চিত। পদ্মা সেতু আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করেছে। এর সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণসহ নিয়মিত দেখভাল ও নিরাপত্তা নিয়ে অবহেলার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের।