গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ

8

দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়েছিল ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে। অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা অনেক বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে দেশে ফেরেন ১৯৮১ সালে। জ্যেষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনা হাল ধরেন আওয়ামী লীগের। প্রায় দশ বছর আন্দোলন-সংগ্রামের পর দেশে স্বৈরাচারমুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম হয়। তবে ক্ষমতায় যেতে দলটিকে অপেক্ষা করতে হয় আরও পাঁচ বছর। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় গিয়ে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা দল হিসেবে আওয়ামী লীগ দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আবারও দলটিকে ক্ষমতার বাইরে পাঠানো হয়। অপেক্ষা করতে হয় সাত বছর। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ‘৯৬ সালের অসম্পূর্ণ দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করে। গত ১৩ বছরে তারা বাংলাদেশকে পৌঁছে দিয়েছে উন্নত বিশে^ পৌঁছার মহাসড়কে। দেশের মানুষ এখন উন্নত বিশে^র স্বপ্ন দেখতেই পারে। এই দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার রাতে। ক্ষমতাসীন দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আগামী বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বৈঠকটি ডাকা হয়েছিল মূলত দলের সাংগঠনিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য। দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি, ২৩ জুন দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে। আলোচনায় উঠে আসে আগামীর অনেক পরিকল্পনার প্রসঙ্গও। নেয়া হয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। কাউন্সিল সামনে রেখে দল পুনর্গঠনে গুরুত্বারোপ করে বলা হয়, বিগত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাদের কোনভাবেই দলের কোন পর্যায়ের কমিটিতে রাখা হবে না। দীর্ঘ সাড়ে ৫ ঘণ্টার বৈঠকে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ইভিএমের মাধ্যমে।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি-ডান-বাম ও অতি বাম কিছু রাজনৈতিক দল সরকার উৎখাতের কথা বলছে। আমাদের অপরাধ কি? জিয়া-এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকার দেশে দুঃশাসন চালিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে। আমরা মানুষ হত্যার বদলে দেশের উন্নয়ন করেছি। দেশের মানুষ এখন ভাল আছে। পেছনের দরজা দিয়ে আওয়ামী লীগ কখনও ক্ষমতায় আসেনি, ভবিষ্যতেও আসবে না। দেশবাসী না চাইলে কেউ আমাদের উৎখাত করতে পারবে না।’ প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সব রকম সহযোগিতা দেয়া হবে। বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে।’ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। এই দলের উদ্দেশ্য থাকবে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন, এটিই স্বাভাবিক। সকল দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় গিয়ে দলটি দেশের উন্নয়নে ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে, এই প্রত্যাশা দেশের সব নাগরিকের।