কাজিরবাজার ডেস্ক :
যে সব আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি কোম্পানির বাংলাদেশে কোনো স্থায়ী অফিস নেই এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরাসরি করের আওতায় আসবে।
এছাড়া দেশে ই-কর্মাস ব্যবসার ক্রমবর্ধমান প্রসারের কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর আইনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বিলে ফ্রি হুইলিং ‘ই-কর্মাস’ ব্যবসাকে সংজ্ঞায়িত করতে পারে।
আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের অংশ হিসেবে এনবিআরের আয়কর শাখা ডিজিটাল অর্থনীতি থেকে কর রাজস্ব সংগ্রহ এবং প্রত্যক্ষ করের জাল প্রসারিত করতে সম্ভাব্য কর যোগ্য-আয়ের ক্ষেত্রগুলো নিয়ে কাজ করছে।
বর্তমানে এনবিআর গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজন, নেটফ্লিক্স এবং উদীয়মান মেটাভার্সে রাজত্ব করা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম থেকে ভ্যাট ছাড়া অন্য কোনো আয়কর পায় না।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুসারে, উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা যখন ব্যাংকগুলো প্রেরণ করবে তখন স্থায়ী অফিস থাকা বিদেশি কোম্পানিগুলো থেকে ২০ শতাংশ উৎসে কর কাটতে হবে।
আয়কর কর্মকর্তারা বলছেন যে তফসিলি ব্যাংকগুলো বর্তমানে বাংলাদেশে স্থায়ী অফিস থাকা সংস্থাগুলোর আয়ের ওপর উৎসে কর কাটতে পারে না।
তারা বলেন, সরকারি উচ্চপদস্থদের অনুমোদন সাপেক্ষে বাংলাদেশে স্থায়ী অফিস থাকা বা না থাকা কোম্পানিগুলোর ওপর আসছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎসে কর আরোপ করা হতে পারে।
আয়কর কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশে গুগল, ফেসবুক, অ্যামাজন এবং নেটফ্লিক্সের মতো প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর পদচারণা কর কর্তৃপক্ষকে প্রত্যক্ষ-কর ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে প্ররোচিত করেছে।
এসব কোম্পানি বিশ্বব্যাপী প্রচুর মুনাফা করছে। ২০২১ সালের চূড়ান্ত ত্রৈমাসিকে গুগলের নেট আয় ৩২ শতাংশ বেড়ে ৭৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, ওই বছরের শেষ পর্যন্ত মোট ৭৬ বিলিয়ন ডলার লাভ হয়েছে।
একজন ঊর্ধ্বতন কর কর্মকর্তা বলেন, এসব কোম্পানি বাংলাদেশে যে পরিমাণ আয় করবে তার ওপর ট্যাক্স দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অনাবাসী সংস্থাগুলোর জন্য করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করা সম্ভব হবে না। কারণ তারা স্থায়ী অফিস ছাড়া ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে পারবে না। ’
কর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে স্থায়ী অফিস নেই এমন কোম্পানিগুলোর জন্য কিছু ভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থার খোঁজ করছে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে করদাতা অনাবাসিক সংস্থাগুলোকে তাদের আয়ের ঘোষণা গ্রহণ করতে হবে কারণ এনবিআর বিদেশি কোম্পানিগুলোর ভার্চ্যুয়াল লেনদেনের ভুল ঘোষণা সনাক্ত করতে সক্ষম নয়।
তবে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তাদের নিজ দেশে আয় পাঠানোর সময় এভাবে কর কর্তনের মাধ্যমে দ্বৈত-কর পরিহার চুক্তির (ডিটিএএ) কিছু ধারা লঙ্ঘন করা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অপর একজন কর কর্মকর্তা (যিনি ডিটিএএ নিয়ে কাজ করেন) বলেন, এনবিআর বর্তমানে যে এলাকা থেকে কর সংগ্রহ করে তা ডিটিএএর আওতায় পড়ে না।
এর আগে, হাইকোর্ট একটি রায়ের পূর্ণ পাঠে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলো তাদের আয়কর রিটার্ন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) জমা দিতে বাধ্য।