বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
মাটিয়ান হাওরের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজার বাঁধ আলমখালি এখনো অরক্ষিত। ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে বাঁধের কাজ সমাপ্ত করার শেষ দিন হলেও এখনো চলছে বাঁধে মাটি ফেলার কাজ। ড্রেসিং, প্যালাসাইটং সহ বাঁশ কাটার কাজ কবে হবে তা নিয়ে কৃষকদের মনে রয়েছে সংশয়।সেই সাথে চলতি মার্চ মাসের শেষ দিকে পাহাড়ি ঢলের আগাম বন্যার আশংকা তো রয়েছেই।
মাটিয়ান হাওর পার, রতনশ্রী, বড়দল, কাউকান্দি গ্রামের একাধিক কৃষষ জানান, আলমখালি বাঁধটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পাহাড়ি ঢলের পানি নামলে প্রথমে এ বাঁধটি ঝুঁকিতে পরে। একাধিকবার এ বাঁধটি ভেঙ্গে মাটিয়ান হাওরের বোরো ফসল হানি হয়েছে।
সরজমিন মাটিয়ান হাওর আলম খালি বাঁধে গিয়ে দেখা যায় বাঁধে মাটি ফেলা হচ্ছে। ধীর গতিতে চলছে মাটির কাজ। এ অবস্থায় কাজ চলতে থাকলে বৃষ্টি বাদল শুরু হলে বাঁধটি আরও হুমকিতে পরবে। সেই সাথে আগাম বন্যার ঝুঁকিতে থাকবে হাজারো কৃষকের ৬ হাজার হেক্টরের বেশী জমিতে রোপণকৃত বোরো ফসল।
জানা যায়, সরকারের বেঁধে দেয়া ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে বাঁধের কাজ সম্পন্ন করার চুক্তিইে প্রকল্প কাজ নেন কাউকান্দি গ্রামের আইন উদ্দিন। কাজের প্রাক্কলতি মূল্য ধরা হয় ২৪ লক্ষ ৩৪ হাজার ৩৮৪ টাকা। প্রকল্প পাওয়ার পর থেকেই পিআসি সভাপতি আইন উদ্দিন ইচ্ছে মত মাটির কাজ শুর করেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি যেখানে বাঁধের সম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করার কথা সেখানো আজও মাটির কাজ করছেন তিনি। এ ভাবে ধীর গতিতে কাজ করতে থাকলে কবে মাটির কাজ শেষ হবে, কবে প্যালাসাইটিং এর কাজ শুরু হবে তা তিনিই বলতে পারেন।
এ বিষয়ে কথা হয় প্রকল্প সভাপতি আইন উদ্দিন এর সাথে। তিনি জানান, ৮ মার্চ এর মধ্যে মাটির কাজ শেষ হবে। পরবর্তীতে তিনি প্যালাসাইটিং এর কাজ শুরু করবেন।
মাটিয়ান হাওর পার রতনশ্রী গ্রামের কৃষক বুলবুল আমিন বলেন, মাটিয়ান হাওরের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ হলো আলম খালি। বাঁধটিতে এখনো মাটি ফেলার কাজই শেষ হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ তাহিরপুর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, মাটিয়ান হাওরের আলমখালি বাঁধের মাটির কাজ দু একদিনের মধ্যে শেষ হবে। পরবর্তীতে ড্রেসিং ও পেলাসাইটিং এর কাজ করা হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে কাজ সম্পন্ন হলো না কেন জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় সংসদ ( হাওর বেস্টিত ৭ জেলা) এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, আমি তাহিরপুর উপজেলার বৃহৎ দুটি হাওর মাটিয়ান ও শনি হাওরে সর জমিন ঘুরেছি। এর মধ্যে মাটিয়ান হাওরের আলমখালি বাঁধের অবস্থা খুবই খারাপ। তিনি আরও জানান, বিষয়টি তিনি তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছেন।
বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সভাপতি তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রায়হান কবির বলেন, বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে বিলম্ব করায় ইতিমধ্যে দু’একজনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। মাটিয়ান হাওর আলমখালি বাঁধের প্রকল্প সভাপতিকে বলেছি দ্রুত সময়রে মধ্যে কাজ শেষ করতে।