কাজিরবাজার ডেস্ক :
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দশম দিনে ইউক্রেনের একটি অভিবাসী শিবিরে ৫ বাংলাদেশীসহ শতাধিক বিদেশীকে জিম্মি করা হয়েছে। যুদ্ধের মধ্যে অনেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও ইউক্রেনের দুই শহর মারিওপোল ও সুমিতে আটকা পড়েছেন ১০ বাংলাদেশী। যুদ্ধক্ষেত্র ইউক্রেন থেকে দেশে ফেরার যাত্রা শুরু করেন বাংলাদেশের ২৮ নাবিক। বাংলাদেশ সময় শনিবার সন্ধ্যায় তারা রোমানিয়ায় পৌঁছান। সেখান থেকে সুবিধাজনক সময়ে তাদের দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে আটকেপড়া অবস্থা থেকে নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি সরকারের এক বিস্ময়কর বিরাট সাফল্য বলে কূটনৈতিক সূত্রের দাবি।
জানা যায়, এর আগে শনিবার দুপুরে শেল্টার হাউস থেকে মালদোভার পথে যাত্রা শুরু করেন ইউক্রেনে আটকেপড়া বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক ও ক্রু। বাংলাদেশ সময় শনিবার বেলা ১টার দিকে এ যাত্রা শুরু করেন তারা। এ যাত্রায় হাদিসুর রহমানের মরদেহ সঙ্গে নেই নাবিক-ক্রুদের।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন মোঃ এনাম চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ‘ইউক্রেনে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীদের একটি সংস্থার সাহায্যে বাসে করে তারা ইউক্রেনের অলভিয়া পোর্ট থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে মলদোভার পথে যাত্রা শুরু করেছেন। আমাদের সঙ্গে নাবিকদের যোগাযোগ হয়েছে, তবে এ যাত্রায় হাদিসুর রহমানের মরদেহ আনা সম্ভব হচ্ছে না। তার মরদেহ বাঙ্কারে ফ্রিজারে রাখা হয়েছে। ২৮ নাবিক ক্রু নিরাপদে ফিরে এলে এরপর মরদেহ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, পথে নানা ঝুঁকি আছে। তাদের যাত্রার আগে অগ্রবর্তী একটি রেকি টিম গেছে। তাদের সবুজ সংকেত পেয়েই যাত্রা আরম্ভ হয়। অলভিয়া থেকে মলদোভা কাছাকাছি হওয়ায় সেদিকেই যাত্রা। কোন কারণে ওই পথে সমস্যা হলে রোমানিয়াতেও যেতে পারে। সবাই ওদের জন্য দোয়া করবেন।’
ইউক্রেনের বন্দরে গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি পরিত্যক্ত (এ্যাবানডন্ড) ঘোষণা করা হয়েছে। ইউক্রেন থেকে এক বাংলাদেশীকে উদ্ধার করেছে ভারত। এরই মধ্যে ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে পৌঁছেছেন ৬ শতাধিক বাংলাদেশী। ইউক্রেনে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহ ইউক্রেন সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে বেসামরিক নাগরিকদের যুদ্ধ এলাকা ছাড়ার সুযোগ দিতে ইউক্রেনের দুই শহর মারিওপোল ও ভলনোভাখায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। যুদ্ধের মধ্যে ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশ ইউক্রেন ছেড়েছেন বলে রাশিয়ার নেতারা ইঙ্গিত করলেও তিনি তা নাকচ করে এক ভিডিও ভাষণে বলেছেন, পালাইনি, কিয়েভেই আছি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জোট ন্যাটো নো ফ্লাই জোন ঘোষণার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
কূটনৈতিক ও গণমাধ্যম সূত্রে এ খবর জানা গেছে, ইউক্রেনের কিভারতিসি শহরের একটি অভিবাসী শিবিরে আটকে আছেন ৫ বাংলাদেশীসহ শতাধিক বিদেশী। শুক্রবার ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাস নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই বাংলাদেশীদের পাঠানো একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, জিম্মি ওই বাংলাদেশীরা উদ্ধারের জন্য আকুতি জানাচ্ছেন। ভিডিওতে রিয়াদুল মালিক নামের একজন বাংলাদেশী নিজের পরিচয় দিয়ে জানান, আমরা বেলারুশ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে আছি। যে কোন সময় কোন কিছু হতে পারে। একজন দরজায় পাহারা দিচ্ছেন। তাদের সবার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়েছে। একটি মোবাইল লুকিয়ে রাখতে পেরেছেন। রিয়াদুল মালিক বলেন, এই শিবিরকে ইউক্রেনের সেনারা ঘাঁটি বানিয়েছে। রাশিয়া সেনাঘাঁটি দেখে দেখে বোমা ফেলছে। তাই আমরা অনেক ভয়ে আছি। এখানে নারী ও শিশুসহ একশ’র ওপর মানুষ আটকে আছে। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৭ ফেব্রুয়ারি বলেছিল, ইউক্রেনের কারাগারে বা বন্দিশিবিরে থাকা বাংলাদেশীদেরও উদ্ধার করে নিয়ে আসার লক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মাধ্যমে কাজ করছে।
ইউক্রেনের দুই শহরে ১০ বাংলাদেশী আটকা : যুদ্ধের মধ্যে অনেকে পালিয়ে এলেও ইউক্রেনের দুই শহর মারিওপোল ও সুমিতে ১০ বাংলাদেশী আটকা পড়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন গণমাধ্যমে এই খবর জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মারিওপোল শহরে দুজন এবং সুমিতে আট জন আটকা পড়েছেন। আপনারা জানেন, সেখানকার পরিস্থিতি খুব কঠিন। এই দশ জন বাংলাদেশীকে শহর দুটি থেকে সরিয়ে নিতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। ইউক্রেনের সুমি শহরটি দেশটির পূর্ব-উত্তরাঞ্চলে রাশিয়া সীমান্তের কাছে। এর কাছের খারকিব শহরে রাশিয়ার বাহিনীর ব্যাপক গোলাবর্ষণের খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম হয়ে এসেছে। সুমিতেও বৃহস্পতিবার রাতে বোমা হামলা হয়েছে। মারিওপোল শহরটিও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রুশ সীমান্তের কাছে। সেই শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর শনিবার রাশিয়া সেখানে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে বেসামরিক মানুষদের সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে। এই দুটি শহরই ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্ত থেকে হাজার কিলোমিটার দূরে। ইউক্রেন থেকে যারা পালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকছেন। ওই সীমান্তের রোমানিয়া ও মলদোভা সীমান্তেও যাচ্ছেন শরণার্থীরা। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেদেশের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে না বেরিয়ে সুমিতেই কোন শেল্টারে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। স্থানীয়দের হিসাবে ইউক্রেনে কয়েক হাজারের মতো বাংলাদেশী রয়েছেন। সেখানে বাংলাদেশের দূতাবাস না থাকায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর তারা বিপাকে পড়েন। পাশের দেশ পোল্যান্ডে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে। সেখান থেকে বাংলাদেশীদের দেখভালের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ইউক্রেন থেকে দেশে ফেরার যাত্রা শুরু ২৮ নাবিকের : যুদ্ধক্ষেত্র ইউক্রেন থেকে দেশে ফেরার যাত্রা শুরু করেছেন বাংলাদেশের ২৮ নাবিক। শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুরে তারা অলভিয়া বন্দর সংলগ্ন ‘শেল্টার হাউস’ থেকে বেরিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন বলে জানিয়েছে বাণিজ্যিক জাহাজের নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ)। বিএমএমওএ সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সাখাওয়াত হোসাইন গণমাধ্যমে বলেছেন, সেখানে থাকা নাবিকদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। উনারা জানিয়েছেন যে, উনারা রওনা হয়েছে। তবে তাদের অবস্থান জানাতে অপারগতা জানিয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণে এখন কোন পথে রওনা হয়েছেন বা কোথায় আছেন, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। আপনারাও বিষয়টি প্রকাশের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন, এটা আমাদের অনুরোধ। নাবিকরা বলেছেন, তাদের জন্য দোয়া করতে। উনার কোন নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছালে আপনাদের জানাব বলেছেন সাখাওয়াত।
এর আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, গত ৩ মার্চ ইউক্রেনে আটকেপড়া বাংলাদেশী জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ থেকে ২৮ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেন থেকে উদ্ধার হওয়া নাবিকের মলদোভা হয়ে তাদের রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। গত বুধবার ইউক্রেনে বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। জাহাজে থাকা নাবিকরা সবাই মিলে আগুন নেভায়। ওই হামলায় হাদিসুর মারা যান। এর পরপরই জাহাজে থাকা নাবিকরা ভিডিও বার্তায় তাদের নিরাপদে উদ্ধারে আকুতি জানায়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে যায় এমভি সমৃদ্ধি। সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে ইতালির র্যাভেনা বন্দরে যাবার কথা ছিল জাহাজটির। এদিকে যুদ্ধের মধ্যে গোলার আঘাতে পরিত্যক্ত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক শনিবার সকালে দেশে ফেরার যাত্রায় অলভিয়া বন্দর থেকে নতুন গন্তব্যে অর্থাৎ বাংলাদেশের উদ্দেশ রওনা হয়েছেন বলে জানা গেছে।
যেভাবে উদ্ধার হলেন বাংলার সমৃদ্ধির নাবিকরা : যুদ্ধের মধ্যে গোলার আঘাতে একজন নিহত এবং জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরদিন বাংলাদেশী এই ২৮ জনকে একটি ‘শেল্টার হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছিলেন, পাশের দেশ মলদোভা হয়ে বাংলাদেশী এই নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। ইউক্রেনে বাংলাদেশের দূতাবাস না থাকায় পোল্যান্ড দূতাবাস থেকে সব বিষয় দেখভাল করা হচ্ছে। শনিবার তারা রওনা হওয়ার পর জানতে চাইলে পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন গণমাধ্যমে বলেছেন, এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। নাবিকরা নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছানোর পর আপনাদের সব জানাব। আপনারা ধৈর্য ধারণ ধরুন।
গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজ এখন পরিত্যক্ত : গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজ এখন পরিত্যক্ত জাহাজটি থেমে নেমে নাবিকরা বন্দরের কাছাকাছি একটি শেল্টার হাউসে ছিলেন। সেখানে বাঙ্কারে তারা নিরাপদে ছিলেন বলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন তারা। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের ভেড়ার পরদিনই দেশটিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে শুরু হলে এটি আটকে যায়। যুদ্ধের মধ্যে নাবিকরা জাহাজেই ছিলেন। গত বুধবার একটি গোলার আঘাত হয় জাহাজটিতে। এতে জাহাজে থাকা থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোঃ হাদিসুর রহমান মারা যান। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এদিকে যুদ্ধের মধ্যে গোলার আঘাতে পরিত্যক্ত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক শনিবার সকালে দেশে ফেরার যাত্রায় অলভিয়া বন্দর থেকে নতুন গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।
ইউক্রেন থেকে এক বাংলাদেশীকে উদ্ধার করেছে ভারত : ভারতের ‘অপারেশন গঙ্গা’ নামে চলমান উদ্ধার অভিযানের অধীনে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে এক প্রবাসী বাংলাদেশীকে উদ্ধার করেছে ভারত। ভারত কর্তৃক প্রতিবেশী কোন দেশের নাগরিককে ইউক্রেন থেকে উদ্ধার করার এটাই প্রথম ঘটনা। গত ৪ মার্চ সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমইএ) মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইউক্রেন থেকে ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ‘অপারেশন গঙ্গা’ নামে একটি টিম কাজ করছে। অপারেশন গঙ্গার মাধ্যমে একজন বাংলাদেশীকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি একজন ছাত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নেপালি এক নাগরিককে উদ্ধার করার জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত সপ্তাহে প্রতিবেশী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নাগরিকদেরও ইউক্রেন থেকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। ভারত ইউক্রেন থেকে ‘অপারেশন গঙ্গা’ শিরোনামে সবচেয়ে বড় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে। এখন পর্যন্ত ৪৮টি ফ্লাইটে ১০ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ভারতীয় নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আরও ২০টি জাহাজ : ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে শুধু বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিই আটকে পড়েনি। বিভিন্ন দেশের আরও প্রায় ২০টি জাহাজ আটকে আছে বন্দরটিতে। বিভিন্ন দেশের ২০টি জাহাজের নাবিক ও ক্রুদেরাও প্রাণ শঙ্কায় ভুগছেন এবং তাদের নিজ দেশের সরকারের কাছে তাদের উদ্ধার করে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আকুতি জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার তাদের আটকেপড়া নাবিক ও ক্রুদের নিরাপদ স্থানে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে পৌঁছেছেন ৬ শতাধিক বাংলাদেশী : ইউক্রেন থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ড পৌঁছেছেন ৬ শতাধিক বাংলাদেশী। সেখানে আরও প্রায় ১০০ বাংলাদেশী এখন আটকে থাকতে পারেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গত ৪ মার্চ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনে যারা এখনও আছেন, তাদের বেশির ভাগেরই ফ্যামিলি সেখানে আছে। তারা হয়তো ইউক্রেন ছাড়বেন না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউক্রেনে কিছু পকেট আছে, যেখানে বাংলাদেশীরা থাকতে পারেন। আমরা সেখানকার ভারতীয় দূতাবাসকে অনুরোধ জানিয়েছি, ভারতীয়দের উদ্ধারের সময় যদি বাংলাদেশী কেউ থাকে, তাকেও যেন সঙ্গে নেয়া হয়। যুদ্ধের ফলে রূপপুর প্রকল্পে এখনই কোন প্রভাব পড়বে না বলেও জানান তিনি।
হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেন সরকারের কাছে হস্তান্তর : বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন মোঃ এনাম চৌধুরী হাদিসুর রহমানের মরদেহ বাঙ্কারের ফিজারে রাখার কথা জানালেও গত ৪ মার্চ নিহত হাদিসুর রহমানের এক সহকর্মী জানিয়েছেন, ইউক্রেনে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহ ইউক্রেন সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে একইদিন তাঁর জানাজা সম্পন্ন হয়। নিহত হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগীর হোসনাবাদ ইউনিয়নে।