জগন্নাথপুরে ঘাস ভান্ডার নলুয়ার হাওর

4
জগন্নাথপুরে নলুয়ার হাওরে ঘাস কাটতে ব্যস্ত কৃষক।

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওর হচ্ছে ঘাস ভান্ডার। উপজেলার অন্যান্য হাওরে ঘাস পাওয়া গেলেও নলুয়ার হাওরের মতো নয়। প্রতি বছরের ফাল্গুন মাস হচ্ছে কৃষকদের জন্য ঘাস উৎসব। প্রতি বছরের মতো এবারো ঘাস উৎসব শুরু হয়েছে।
নলুয়ার হাওরে ঘাস সংগ্রহ করতে আসা ও স্থানীয় কৃষকরা জানান, নলুয়ার হাওর হচ্ছে ঘাস ভান্ডার। অন্য ছোট ছোট হাওরে আশারুপ ঘাস পাওয়া যায় না। তাই কম সময়ে চাহিদা অনুযায়ী ঘাস কাটতে সবাই ছুটে আসেন নলুয়ার হাওরে। নলুয়ার হাওরে ঘাসের শেষ নেই। যতো কাটা হয়, ততোই যেন ঘাস বেড়ে উঠে। গবাদি-পশুর জন্য সব থেকে পছন্দের খাবার হচ্ছে এসব তাজা ঘাস। যে কারণে জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল সহ দেশের অন্য স্থান থেকেও মানুষ গাড়ি নিয়ে ছুটে আসেন নলুয়ার হাওরে। প্রতিদিন কমপক্ষে শতাধিক মানুষ ঘাস সংগ্রহের জন্য এখানে আসেন। দূরের কৃষকরা বিভিন্ন ধরণের গাড়ি দিয়ে তাদের শ্রমিকদের পাঠিয়ে দেন ঘাস নিতে। তারা ঘাস কেটে গাড়ি ভর্তি করেন নিয়ে যান।
স্থানীয় কৃষকরা নিজে অথবা তাদের শ্রমিকদের দিয়ে দিনব্যাপী ঘাস কাটান। এসব ঘাস কেউ মাথায় বুঝা করে নেন। কেউ আবার কাঁধে করে নিয়ে থাকেন। অনেকে আবার ঠেলা, রিক্সা, মিশুক, ইজিবাইক ও সিএনজিতে বস্তা ভর্তি করে নেন। সব মিলিয়ে যে যেভাবে পারছেন, নলুয়ার হাওর থেকে ঘাস সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে অনেক মানুষ তাজা ঘাস খাওয়ানোর জন্য ষাঁড় গরু নিয়ে হাওরে যান।
এদিকে-জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এসব তাজা ঘাস বিক্রি হতে দেখা যায়। তাজা ঘাসের কদর বেশি হওয়ায় গবাদি-পশুর মালিকরা উচ্চ দামে কিনে নিয়ে থাকেন। এক শ্রেণির মানুষ ঘাস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিদিন সকালে এসব তাজা ঘাস হাওর থেকে কেটে এনে হাট-বাজারে বিক্রি করেন। প্রতি বছরের মতো এবারো ঘাস বিক্রির ধুম পড়েছে।
২৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, সবুজের সমারোহ নলুয়ার হাওর। চারদিকে সবুজ ধানের পাতা বাতাসের তালেতালে দুলছে। জমির সীমানা রেখা ছোট বাঁধ (স্থানীয় ভাষায় আইল) জুড়ে রয়েছে শুধু ঘাস আর ঘাস। কাস্তে দিয়ে এসব ঘাস কাটতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ঘাস নিতে আসা মানুষ। ধানের ফাঁকে ফাঁকে ঘাস কাটতে ব্যস্ত তারা। হাওরে যেন রীতিমতো ঘাস কাটার প্রতিযোগিতা চলছে।