বাঁশের সাঁকোতে দুর্বৃত্তদের হানা! ওসমানীনগর-জগন্নাথপুরের লক্ষাধিক মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

8
ওসমানীনগরের অষ্টাগঙ্গা খানের উপর নির্মিত লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি পুড়িয়ে দেয় দুর্র্বৃত্তরা।

শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
ওসমানীনগর ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ১০ গ্রামের মানুষের চলাচলের সরাসরি যোগযোগের একমাত্র মাধ্যম অষ্টাগাঙ্গের উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো রাতের আঁধারে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফলে গত চার দিন ধরে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের রয়েছেন যোগযোগ বিচ্ছিন্ন। সাঁকোটি পুড়িয়ে দেয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষসহ অসুস্থ রোগী ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করলেও ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্য়ন্ত ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। তবে গত সোমবার বিকেলে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক জড়িতদের খোঁজে বের করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, ওসমানীনগরের উমরপুর ইউপির মজলিশপুর গ্রামের অষ্টাগঙ্গা খালের উপর স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত পাকা সেতু না থাকায় প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে বাঁশের চাটাই দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়। আর এই সাঁকো দিয়ে ওসমানীনগরের মাধবপুর, মজলিশপুর, মির্জা সহিদপুর, মিটাভরাং, সান্দরগাঁও এবং জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউপির দাওরাই, ঐয়াকোনা, নোয়াগাঁও, মিঠাভরাং ও জায়ফরপুর গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ ছোট ছোট যানবাহন সহ পায়ে হেঁটে চলাচল করে অসছে। গত শুক্রবার গভীর রাতে অজ্ঞতনামা দৃর্বত্তরা সাঁকোর একাধিক স্থানে দাহ্যপদার্থ দিয়ে আগুন লাগিয়ে বাঁশের সাঁকোটির একাধিক স্থান পুড়িয়ে দেয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাঁকোর উত্তর ভাগের অনেকাংশ আগুনে পুড়ে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া সাঁকোর একাধিক স্থাননের খন্ড খন্ড অংশ পুড়ে প্রায় পুরো সাঁকোটি অকেজো হয়ে পরেছে। স্থানীয় একাধিক লোকজন জানান, প্রায় দুই মাস পূর্বেও এই সাঁকোটি পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা একই ভাবে মজলিশপুর গ্রামের পল্লী বিদ্যুতের ৩৩ কেভি লাইন কেটে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে ফেলে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারীরা।এই ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতের খাশিকাপন জোনাল অফিসের ডিজিএম ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত সেই ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে শনাক্ত করা হয়নি।
মজলিশপুর গ্রামের আনহার আলী, রায়হান আহমদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুর রহিম, মিঠাভরাংয়ের উমরা মিয়া, নূরুল ইসলাম ও সিএনজি অটোরিক্সা চালক আব্দুল হক বলেন, দুষ্কৃতিকারিরা সাঁকোটি পুড়িয়ে ফেলায় আমরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। এই বিষয়য়ে আমরা তাৎক্ষণিক তিন গ্রামের মানুষ বৈঠক করে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ঘটনাটি কে বা কারা ঘটিয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম মাইন উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পাশাপাশি জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে থানা পুলিশ তৎপর রয়েছে। সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।