মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে প্রচন্ড শীতে জন-জীবন রীতিমতো কাবু হয়ে পড়েছে। হাড় কাপানো শীতে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। শীত নিবারণের আশায় মানুষ একের পর এক মোটা গরম কাপড় পরিধান করছেন। তাতেও কাজ হচ্ছে না। কোন কিছুতেই যেন প্রচন্ড শীত থেকে নিজেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। মাঘের শেষ দিকে এসে প্রচন্ড শীত ঝেঁকে বসেছে। দিনেদিনে বেড়েই চলছে শীতের মাত্রা। বাড়ছে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তবে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো চাইলেও ঘরে থাকতে পারছেন না। জীবন-জীবিকার তাগিদে তারা শীতকে উপেক্ষা করে কাজ করছেন।
জেলেরা খাল-বিল ও নদীর হিম শীতল পানিতে নেমে জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। কৃষক ও তাদের দিনমজুর শ্রমিকরা কাঁদা পানিতে নেমে বোরো জমি পরিচর্যার কাজ করছেন। এছাড়া মাটি কাটা সহ আরো বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত আছেন দিনমজুর মানুষগুলো। তবুও চলছে না অনেকের সংসার। তাদের অনেকের সংসারে টানাপোড়েন লেগেই আছে। আর গরম কাপড় বলতে ফুটপাতের দোকান থেকে কমদামে কেনা সুয়েটার, জ্যাকেট কিংবা চাদর। তাদের সংসাদের নারী ও শিশুদেরও একই অবস্থা। এরপরও তারা তুলনামূলক অনেক ভাল আছেন। এ বিষয়ে অনেকে জানান, দিনমজুর খেটে খাওয়া অসহায় মানুষগুলোকে আল্লাহপাক সাহায্য করেন বলেই তারা এতো শীতের মাঝেও কাজ করতে পারছেন। ভালও আছেন।
এর মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে শীতের মাত্রা তুলনামূলক ভাবে বেড়ে গেছে। ৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার দিনের শুরুতে সূর্য্যরে দেখো মিললেও ছিল না রোদের গরম প্রভাব। যেন রোদকে আকাশে রেখেই শীত পৃথিবী দখলে নিয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকেই দ্বিগুণ বেড়েছে শীতের মাত্রা। এ সময় পথচারী শীতার্ত মানুষগুলো একটু গরম পরশের আশায় কাগজ দিয়ে আগুন জ্বালাতে দেখা যায়। তখন আগুনের চারদিক ঘিরে ছিলেন মানুষ। এক সময় কাগজ শেষ হয়ে আগুন নিভে গেলে নিরাশ হয়ে যার যার মতো হেঁটে চলে যান তারা।
এদিকে-এবার শীত মৌসুম আসার পর থেকে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে মাঝে মধ্যে অসহায় পরিবারের মধ্যে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ করা হলেও পর্যাপ্ত নয় বলে অনেকে জানিয়েছেন। আরো অনেক অসহায় মানুষ বাকি রয়ে গেছেন। তাই লোক দেখানো বিতরণ না করে প্রকৃত শীতার্ত অসহায় মানুষকে খুজে বের করে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। শুধু কম্বল নয়, আরো উন্নতমানের মোটা গরম কাপড় দিতে হবে। তাহলে এবারের প্রচন্ড শীতে কিছুটা হলেও শীত নিবারণ হবে। তাই মানুষ মানুষের জন্যে। মানবতার তাগিদে আসুন আমরা সবাই মিলে সমাজের অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই। যার যার সাধ্য মতো সহযোগিতা করি। সবাই মিলে এ প্রচন্ড শীতকে মোকাবেলা করি। এমন অভিমত সচেতন মহলের অনেকের।