কাজিরবাজার ডেস্ক :
মারাত্মক খাবারের সংকটের মধ্যে পড়েছেন মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যের প্রাসু টাউনশিপের বাসিন্দারা। সামরিক জান্তা সরকারের বাহিনী এবং প্রতিরোধ গ্রুপগুলোর মধ্যে চলা সংঘর্ষে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ক্ষুধায় কাতর ওই এলাকার বাসিন্দারা ভুট্টার সঙ্গে চাল মিশিয়ে রান্না করে খেয়ে টিকে আছেন।
জান্তা সরকারের নির্বিচার বিমান হামলা এবং প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে কায়াহ রাজ্যে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ। রাজ্যটির রাজধানী লইকাউ এবং ডেমোসোর মতো শহরগুলো জনশূন্য হয়ে পড়েছে।
বাস্তুচ্যুত শিবিরে বসবাসকারী বেসামরিক বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চাল সংকটের কারণে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ক্ষুধার্ত রয়েছেন তারা। আর তাদের কাছে সামান্য কয়েক দিনের মতো চাল ও ভুট্টা রয়েছে।
কারেন্নি হিউম্যান রাইটস গ্রুপের মুখপাত্র কো বানিয়ার বলেন, ‘বাওলেক গ্রাম সংলগ্ন মানুষেরা ক্ষুধার্ত। জান্তা সেনা সদস্যরা গ্রামের কাছের একটি পাহাড় থেকে পানি সংগ্রহ করছে এবং নিয়মিতভ প্রতিরোধ গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়াচ্ছে। সেনা সদস্যদের কারণে এলাকাটি বিপজ্জনক এবং খাবার সরবরাহ কঠিন। গ্রামবাসী চাল ও ভুট্টার মিশ্রণ খাচ্ছে।’
কো বানিয়ার আরও বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর থেকে লড়াইয়ের কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। মানুষের খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো কায়াহতে খাবার সহায়তা দিতে চায় কিন্তু শাসক গোষ্ঠী তাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। সংঘাত চলতে থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে।’ তিনি জানান, এক বস্তা চালের দাম ৩০ হাজার কিয়াত থেকে বেড়ে ৬০-৭০ হাজার কিয়াতে পৌঁছেছে।
প্রাসু টাউনশিপের এক কৃষক বলেন, ‘আমরা ধান চাষ করতে পারি না। আমরা তিল এবং ভুট্টা বিক্রি করে চাল কিনি। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা খাবার সংকটে পড়েছি।’
কায়াহ রাজ্যে সংঘাতের কারণে কৃষকেরা তাদের শস্য বিক্রি করতে পারছেন না। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে রেখেছে জান্তা সরকার। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ভুট্টা, তিলসহ অন্য শস্যের দাম পড়ে গেছে।
কায়াহ রাজ্যে ধান উৎপাদনের জমি রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর। রাজ্যটিতে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয় তাতে সেখানকার বাসিন্দাদের চাহিদার মাত্র অর্ধেক পূরণ হয়।