ফেঞ্চুগঞ্জে পিষিকে হত্যার দায়ে ভাইফুর যাবজ্জীবন, বউদি খালাস

3

স্টাফ রিপোর্টার :
ফেঞ্চুগঞ্জে পিষি মনি চন্দকে দা দিয়ে গলা কেটে হত্যার দায়েরকৃত মামলায় এক ভাইফুর যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও বউদিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায়ের পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে বিনাশ্রমে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। বুধবার ২৬ জানুয়ারি দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক মো: মোয়াজ্জেম হোছাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর নাম- অনুপ চন্দ (২৫)। সে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার মাইজগাঁও ইউনিয়নের কায়স্তগ্রাম রাজাপুরের মৃত অরুণ চন্দের পুত্র। খালাসপ্রাপ্ত অরুণের মা সাথী রাণী চন্দ (৫০)। রায় ঘোষনার সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামী অনুপ চন্দ পলাতক ছিলেন।
মামলায় জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জায়গা-জমির ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে মনি চন্দের (অবিবাহিত) সাথে ভাইফু অনুপ চন্দের বিরোধ চলে আসছিলো। এ নিয়ে ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারী সকালের দিকে তাদের দু’জনের ঝগড়া শুরু হয়ে তাদের ঝগড়াটি গড়ায় দুপুর পর্যন্ত। ওইদিনই দুপুর দেড় টা থেকে ২ টার মধ্যে তাদের ঝগড়ার এক পর্যায়ে অনুপ চন্দ ধারালো দা দিয়ে তার নিজ পিষিকে কুপিয়ে গলা কেটে দেহ বিচ্ছিন্ন করে নির্মমভাবে হত্যা করে। অবস্থা বেগতি দেখে অনুপ ও তার মা মিলে মনি চন্দের লাশটি তাদের বসতঘরের পিছনের পশ্চিম পাশে মাটির নিচে পুঁতে গুম করে অনুপ পালিয়ে যায়। দ্রুত ঘটনাটি আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন এক পর্যায়ে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অনুপ চন্দের মা সাথী রাণীকে গ্রেফতার করে। তার দেখানো মতে পুলিশ পুঁতে ফেলা মনি চন্দের লাশটি উদ্ধার করে এবং লাশের সোরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। এ ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জ থানার এসআই মো: মিজানুর রহমান বাদি হয়ে অনুপ চন্দ ও তার মা সাথী রাণী চন্দকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং- ১ (০১-০১-২০০৯)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার এসআই মো: শাহ আলম একই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারী অনুপ ও তার মাকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারী থেকে আদালত এ মামলার বিচারকার্য শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও বেশ কিছু সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী অনুপ চন্দকে ফৌজধারী কার্য্যবিধি আইনের ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয় এবং এ হত্যাকান্ডে তার ছেলেকে সহযোগীতাকারী সাথী রাণীর অপরাধ আদালতে প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সাথী রাণীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে।
রাষ্ট্রপক্ষে এডিশনা পিপি এডভোকেট মো: শামসুল ইসলাম, এপিপি এডভোকেট মোস্তফা দিলওয়ার আল আজহার, এপিপি এডভোকেট মোস্তফা শাহীন চৌধুরী, স্টেট ডিফেন্স এডভোকেট তাহেরা চৌধুরী ও আসামীপক্ষে বিপ্লব কান্দি দে মাধব মামলাটি পরিচালনা করেন।