জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউপির নির্বাচন কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা হবে না, হাইকোর্টের রোল

13

জকিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হওয়া সিলেটের জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউপির বিতর্কিত নির্বাচন কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুলনিশি জারি করে নির্বাচন কমিশনে পিটিশনারদের দায়েরকৃত দরখাস্ত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউপির লুৎফর রহমান খাঁনসহ এলাকার বিশিষ্ট ১০ জন নাগরিকের দায়ের করা রীট পিটিশনের শুনানি শেষে রবিবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও মাননীয় বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের দ্বৈত বেঞ্চে এ আদেশ দেন।
রীট শুনানিতে সরকার পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। পিটিশনারদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী দিদার আলম কল্লোল। আইনজীবী দিদার আলম কল্লোল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বিশিষ্ট ১০ জন নাগরিকের দায়ের করা রীটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ আদেশ দিয়েছেন। তবে ভার্চুয়াল কোর্ট হওয়ার কারণে রুলের জবাব কতদিনের মধ্যে দিতে হবে তা এখনো জানা যায়নি। তিনি বলেন, সেহেতু এ ইউপির নির্বাচনে অনিয়মের যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে তাই নাগরিকদের ভোটাধিকার পেতে পুণনির্বাচন হওয়া জরুরি। হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন সেই আদেশের কপি ইসির কাছেও পৌঁছে দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি ইউপি ভোটের দিন বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের সময় রির্টানিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব ও আরিফুল হক জকিগঞ্জের মরিচা ভোট কেন্দ্রের সামনে থেকে চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীর সিল দেয়া ও খালি ব্যালট পেপার, মুড়ি বই ৮টি, ব্যালেট বাক্সের সিলগালা লক ৮টি, নগদ টাকা ১ লাখ সাড়ে ২১ হাজার, ফেন্সিডিলের খালি বোতল, কালো রঙের ঢাকা মেট্রো-ঠ ১৩-৭০২৮ গাড়ীসহ সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শুক্কুর মাহমুদ মিয়ার হাতে ধরা পড়েন। তাৎক্ষণিক কাজলসার ইউপি ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় দুই রির্টানিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মরিচা ভোট কেন্দ্রের ইনচার্জ জৈন্তা থানার এ এসআই আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে স্থানীয় সরকার আইনে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে, সুলতানপুর ইউপির গণিপুর ভোটকেন্দ্রেও সীল মারা ব্যালেট পেপার বাক্সে ভরার ঘটনায় উত্তেজিত ভোটাররা ঐ কেন্দ্রের ব্যালেট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে দিলে গণিপুর কেন্দ্রের ভোটগ্রহণও স্থগিত করা হয়।
গ্রেফতারকৃত শাদমান সাকীব (৩২) উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আরিফুল হক (৩৬) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। তারা দুজন বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। গত ১৭ জানুয়ারী জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পুলিশের চাওয়া ৫ দিনের রিমান্ড শুনানি হয়। শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহা তাদেরকে দুইদিন করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। এসব বিষয় উল্লেখ করে হাইকোর্টে সুলতানপুর ইউপির লুৎফর রহমান খাঁনসহ এলাকার বিশিষ্ট ১০ জন নাগরিক রীট পিটিশন করে নির্বাচন বাতিল চান। তাদের রীটের শুনানি শেষে এ আদেশ হয়।