জেলা প্রশাসক সম্মেলন

9

বহুল প্রতীক্ষিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ২৪ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি যথার্থই বলেছেন, সরকারী অফিসসমূহে সাধারণ মানুষ যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বিঘ্নে যথাযথ সেবা পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সেবা প্রত্যাশীদের সন্তুষ্টি অর্জনই যেন হয় সরকারী কর্মচারীদের ব্রত।
কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য দুই বছর বিরতির পর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তুলতে তার সরকারের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, দেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ায় দায়িত্ব বেড়ে গেছে। আমরা দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত ও সেবামুখী জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, সিটিজেনস চার্টার ইত্যাদির বাস্তবায়ন জোরদার করতে হবে। রমজানে দ্রব্যমূল্য কঠোরভাবে তদারকি এবং ওমিক্রন প্রতিরোধে ডিসিদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সব ভয়-ভীতি, প্রলোভনের উর্ধে থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বলা নিষ্প্রয়োজন সেবার মনোভাব নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকলে জেলা প্রশাসকদের পক্ষে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে।
এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে সেনাপ্রধানের অংশগ্রহণের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ববহ। দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনকে একসঙ্গে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন সেনাপ্রধান। সোনার বাংলা গড়ার যে অভীষ্ট লক্ষ্য নিয়ে জাতি এগোচ্ছে, সেখানে সামরিক প্রশাসনের সঙ্গে বেসামরিক প্রশাসন যদি একসঙ্গে কাজ না করে তাহলে আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না- এমন বাস্তবোচিত উপলব্ধি সেনাপ্রধানের। ‘বেসামরিক প্রশাসন যখনই মনে করবে যে, সরকারের নির্দেশনায় সেনাবাহিনী তাদের পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারবে, আমরা তখনই তাদের ডাকে সাড়া দেব এবং অবশ্যই তাদের পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করব।’ সেনাপ্রধানের এমন বক্তব্য প্রশংসনীয়।
সাধারণ মানুষ আশা করে জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকগণ যে জনসেবক সেটি অবশ্যই তারা স্মরণে রাখবেন এবং প্রধানমন্ত্রীর জনহিতকর ও যুগোপযোগী নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে মান্য করার মধ্য দিয়ে দেশসেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। সবারই আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকাটাই প্রত্যাশিত।