স্বাস্থ্যবিধিমালা নিশ্চিত করুন

2

করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত ১১ দফা বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করে শাস্তি নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। বাস্তবে বিধিনিষেধের বালাই নেই কোথাও। শাস্তি তো দূরের কথা, কেউ বিষয়টি মনিটরিং করছেন বলেও মনে হচ্ছে না। অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যানবাহন চলার কথা থাকলেও এই বিধি কার্যকর হয়েছে শুধু রেলে। গণপরিবহনের মালিকরা জানিয়েছেন, তারা সকল আসনে যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালাবেন। একই সিদ্ধান্ত লঞ্চ মালিকদেরও। সরকারের নির্দেশের পর তারা কিভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা জানা যায়নি। উপরন্তু গণপরিবহনগুলোতে সিটের বাইরেও পরিবহন করা হচ্ছে দাঁড়ানো যাত্রী । অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এ নিয়ে পরিবহন কিংবা যাত্রী কারও কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে না।
কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলা বা হাট-বাজারে যাওয়ার কথা। হোটেল-রেস্টুরেন্টে টিকা সনদ নিয়ে যাওয়াও করা হয়েছে বাধ্যতামূলক। সংবাদ মাধ্যমে রিপোর্ট হয়েছে, বাণিজ্যমেলায় মাস্ক পরে প্রবেশের পর ভিতরে গিয়ে খুলে ফেলছেন অধিকাংশ দর্শনার্থী। মার্কেট-বাজারে কারও মুখে মাস্ক দেখা যাচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্বাস্থ্যবিধি পরিলক্ষিত হয়নি। বন্ধ হয়নি বিয়ে-জন্মদিন ও সামাজিক অনুষ্ঠান। মাস্ক ছাড়াই সবাই যাচ্ছেন এসব অনুষ্ঠানে। হোটেল রেস্টুরেন্টে টিকার সনদ দেখতে চায়নি কেউ। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও রয়েছে মানুষের ভিড়।
প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ভাঙছে অতীতের সকল রেকর্ড। ঘরে ঘরে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলছে। সর্দি-কাশি-জ্বার হলে টেস্ট করলেই করোনা পজেটিভ পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দেশে পরীক্ষা কম হচ্ছে। পরীক্ষা আরও বাড়ানো হলে রোগীর সংখ্যা অনেক বাড়বে। প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিম বাংলায় একদিনে ৪৩ হাজার পর্যন্ত রোগী পাওয়া গেছে। ভারতের সকল রাজ্যেই হু-হু করে বাড়ছে করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা। চারদিকে ভারত পরিবেষ্টিত বাংলাদেশেও সমান তালে সংক্রমণ বাড়বে- এটিই স্বাভাবিক। অতীতে করোনার যে কটি ঢেউ এসেছে, ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই আমাদের দেশেও বেড়েছে সংক্রমণ এবং মৃত্যু।
অতএব স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সকলকে সরকারের নির্দেশনাগুলো মেনে চলা অবশ্য কর্তব্য। একই সঙ্গে আরও কঠোর হতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে।