স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আওতাধীন মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে একটি স্বার্থন্বেষী মহল নির্বাচনকে বানচাল করতে উঠে পড়ে লেগেছে। ইউনিয়নবাসী সম্মিলিত ভাবে নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা গত ৬ জানুয়ারি থেকে ইউনিয়নের দাবিতে ধারাবাহিক ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে সড়ক অবরোধ, অবস্থান ধর্মঘট, মিছিল মিটিং এবং মানববন্ধন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন পর সরকার মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আগামী ৩১ জানুয়ারি নির্বাচন হওয়ার জন্য তফশিল ঘোষণা করে। এরপর থেকে ওই ইউনিয়নের ভোটারদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিলো। আসন্ন এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলেও ইতিমধ্যে মনোনয়ন দাখিলসহ প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণায় ও নেমেছিলেন জোরেশোরে। ঠিক সেই সময় একটি স্বার্থন্বেষী মহল তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য গত ৫ জানুয়ারি মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা বখতিয়ার আহমদ ইমরান ও আব্দুল মুহিত কুহিনূর উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত আদালত মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের নির্বাচন আগামী ২ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। এ খবর যখন ওই ইউনিয়নের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে পৌঁছে তখন এই ইউনিয়নের ভোটাররা প্রায় দেড় যুগ পর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা হয়ে উঠায় ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষ ফুঁসে উঠেছে। শুধু তাই নয় এখন ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ-উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় অত্র এলাকায় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তানজিদা আফরিন ছন্দা বলেন, রীটের কপি আমাদের কাছে এসেছে। আমরা ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করেছি। কমিশন প্রদত্ত আদেশ শেষে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
এদিকে নাগরিক অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ৮ জানুয়ারি ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বাস্তবায়ন কমিটি। অত্র কমিটির উদ্যোগে ৯ জানুয়ারি সকালে মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আয়োজন করা হয় মানববন্ধন কর্মসূচী।
মেম্বার পদপ্রার্থী ফাহিম আহমদ বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে যখন পুরো প্রস্তুতি নিয়ে প্রচারণায় নেমেছিলাম। ঠিক তখনি পরিকল্পিত ভাবে উচ্চ আদালতে করা রীটের প্রেক্ষিতে ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় প্রার্থীসহ ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ডাঃ তায়েফ আহমদ বলেন, ২০০৩ সাল থেকে ২০২১ সময়ের এ দীর্ঘ পরিক্রমায় ইউনিয়নবাসী তাদের ন্যায্য ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি ৬ষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ইউনিয়নবাসী পুরোদমে প্রস্তুত ঠিক তখনই একটি মহলের অপতৎপরতায় অত্র ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা পুরো ইউনিয়নবাসীকে হতবাক করে দিয়েছে। কিন্তু তাদের সে অপতৎপরতা রুখে দিতে আজ সমগ্র ইউনিয়নবাসী ঐক্যবদ্ধ। নির্বাচনের দাবিতে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচির ডাক দিবেন বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন তিনি। তিনি বলেন, পরিকল্পিত ভাবে উচ্চ আদালতে করা রীটের প্রেক্ষিতে ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় প্রার্থীসহ ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে যত প্রকার বাধা বিপত্তি আসুক না কেন তাহা শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে হবে বলে তিনি ঐক্যমত পোষণ করেন।