দুর্নীতি দূর হউক

4

দুর্নীতিকে দুষ্টক্ষত হিসেবে অভিহিত করেছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি (সুপ্রীমকোর্ট বার) তাকে সংবর্ধনা প্রদান করে। প্রধান বিচারপতির দর্শন ও মনোভাব সম্পর্কে ধারণালাভের সুযোগ পাওয়ার কারণেই অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠেছিল তাৎপর্যপূর্ণ। গণতান্ত্রিক কোন দেশে প্রধান বিচারপতি থাকেন বিশেষ সম্মানজনক আসনে। দেশবাসীর পক্ষে সচরাচর তার কথা শোনার সৌভাগ্য ঘটে না। দায়িত্বে সক্রিয় হয়ে উঠলে অবসরে যাওয়ার আগে জনসমক্ষে তার বক্তব্য দেয়ার তেমন সুযোগ থাকে না। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের সব ব্যক্তির কাছে প্রত্যক্ষভাবে পৌঁছতে পারে, কিন্তু দেশের বিচার ব্যবস্থার শীর্ষস্থানে অবস্থানকারী ব্যক্তিত্বের মুখোমুখি হয়ে তার অভিমত গ্রহণের প্রায় অবকাশ নেই। একজন বিচারপতি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দিতে পারেন না। বিচারকদের আচরণবিধিতেই আছে ‘একজন বিচারক জনবিতর্কে অংশ নেবেন না। বিচারাধীন কোন বিষয় বা রাজনৈতিক কোন বিষয়ে প্রকাশ্যে নিজের মত প্রকাশ বা আলোচনায় তিনি অংশ নেবেন না।’ ফলে সংবর্ধনার মতো মুক্ত অনুষ্ঠানে একজন প্রধান বিচারপতির বক্তব্য সমাজের জন্য বিশেষ প্রাপ্তি।
নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। দুর্নীতিকে ক্যান্সারের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেছেন, দুর্নীতির ব্যাপারে কোন কম্প্রোমাইজ (আপোস) করব না। বিচার বিভাগের কোন দুষ্টক্ষতকে আমরা ন্যূনতম প্রশ্রয় দেব না। এক্ষেত্রে সুপ্রীমকোর্টের সব শাখার অস্বচ্ছতা, অনিয়ম, অলসতা এবং অযোগ্যতাকে নির্মূল করতে যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণে আমি সবাইকে পাশে পাব- এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
দেশে মামলাজটের বিষয়টি বহুল আলোচিত। এতে বহু বিচারপ্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। ন্যায়বিচার প্রত্যাশীদের জন্য মামলাজট একটি হতাশাজনক অধ্যায়। প্রধান বিচারপতি মামলাজট নিরসনে তার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মামলাজট নিরসনে, বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনতে ৮ বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতিকে প্রধান করে একটি করে মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। রাষ্ট্রের সকল বিভাগ ও ব্যক্তিকে নিশ্চিত করতে হবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক সভ্যতা পরাজিত হবে।
বিচার বিভাগের অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আন্তরিকভাবে কাজ করলে সমস্যাগুলোর সমাধান করা যাবে বলে মনে করেন নতুন প্রধান বিচারপতি।