ওমিক্রন আতংক

4

ডেল্টার পর করোনার ওমিক্রন ভাইরাস তা-ব চালাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। প্রতিদিনই ভাঙছে অতীতের সকল সংক্রমণ রেকর্ড। প্রতিবেশী ভারতেও শুরু হয়েছে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব। বাংলাদেশেও পাওয়া গেছে এই ভাইরাস। বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, তাকে সুনামির সঙ্গে তুলনা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও। সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আডানম গেব্রিয়াসিস বিশ^বাসীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সতর্ক না হলে এর মাশুল গুনতে হবে সবাইকে।
বিশ্বজুড়ে ওমক্রিমন সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশেও বেড়েছে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। ওমিক্রনের সন্ধানও মিলেছে। বলা যায়, দেশেও চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন ভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, রাশিয়ায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। এসব দেশে অকিাংশ মানুষকেই টিকার আওতায় আনা হয়েছে। বুস্টার ডোজও চলেছে। নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে নাগরিকদের চলাচলে। তবু আক্রান্ত বাড়ছে প্রতিদিন।
উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশের অবস্থা নাজুক। এখনও টিকার আওতায় আনা যায়নি মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। প্রায় কোথাও স্বাস্থ্য বিধির বালাই নেই। বিয়ে, পিকনিক, পর্যটন, পুনর্মিলনীসহ সব সামাজিক অনুষ্ঠান চলছে বিরামহীনভাবে। গ্রামের কথা বাদ দিলেও শহরগুলোতে বেশিরভাগ মানুষই মাস্ক পরছে না। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। ওমিক্রন যে গতিতে সংক্রমিত হচ্ছে, তাতে বাংলাদেশের অবস্থা কল্পনা করলেও ভীত হতে হয়।
করোনার বিগত দুটি ঢেউ আমাদের ঘাটতিগুলো চোখে আঙ্গুুল দিয়ে দেখিয়ে গেছে। সারাদেশে গ্রামগঞ্জে ডেল্টা সংক্রমণের সময় চিকিৎসা খাতকে মনে হয়েছে অসহায়। করোনা রোগী নিয়ে আত্মীয়-পরিজনরা এক হাসপাতাল থেকে ছুটেছেন আরেক হাসপাতালে। অনেক রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন রাস্তায় গাড়ি কিংবা এ্যাম্বুলেন্সে। ওমিক্রন ভাইরাস আরও ভয়াবহ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে ওমিক্রন ধেয়ে আসছে, তাতে বাংলাদেশেও এর অনিবার্য প্রভাব পড়বে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ওমিক্রন বৃদ্ধি পেতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না নেয়া ছাড়া এটা প্রতিরোধের কোন বিকল্প নেই। এ জন্য সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। হাত ধোয়া এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বাধ্যতামূলকভাবে মানতে হবে সব স্বাস্থ্যবধি। জেলা-উপজেলায় হাসপাতালে জনবলসহ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করতে হবে। গ্রামের মানুষ যাতে গ্রামে বসেই চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন, সেজন্য জরুরীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে সবাইকে আনতে হবে স্বাস্থ্যবিধির আওতায়।