মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জ জেলার প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়নে চতুর্থ ধাপের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচনে যে কারণে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সহজ বিজয় ও ভরাডুবি হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় ভোটাররা জানান, ব্যক্তি ইমেজ, দলীয় পরিচয় ও কূট-কৌশলে যারা এগিয়ে ছিলেন, তারাই নির্বাচিত হয়েছেন। আর যাদের ত্রুটি হয়েছে, তাদেরই ভরাডুবি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জনমতকে যারা গুরুত্ব ও প্রধান্য দিয়েছেন, তারা সহজে বৈতরণি পার হতে পেরেছেন। যারা অবহেলা বা অহঙ্কার করেছেন, তাদের তরী ডুবেছে। নির্বাচনী ভোটযুদ্ধে যারা যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বস্ত যোদ্ধাদের নিয়ে রণ-কৌশলে মাঠ সাজিয়ে জনমতকে আয়ত্বে এনেছিলেন, তারাই বিজয়ী হয়েছেন। যারা পিছিয়ে ছিলেন বা ভুল করেছেন, তারাই পরাজয় বরণ করেছেন। এবারের নির্বাচনে অনেক ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। স্থাপন করেছে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
এর মধ্যে ১নং কলকলিয়া ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত রফিক মিয়া বিজয়ী হলেও তার সাথে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলাল হোসেন রানা হাড্ডাহাডি লড়াই করে অবশেষে মাত্র ৫৩৬ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। এখানে আরেক বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবদুস সোবহানও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছেন। এতে নৌকার সহজ বিজয় হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে বলে অনেকে জানান।
২নং পাটলি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আংগুর মিয়া ৮৭১ ভোটে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ইউনিয়নে ব্যক্তি ইমেজ ও দলীয় পরিচয় প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। যে কারণে নৌকার সহজ বিজয় হয়েছে। এমন অভিমত স্থানীয় জনতার।
৫নং চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল ১৭৬৮ ভোটের বিশাল ব্যবধানে বর্তমান চেয়ারম্যান আরশ মিয়াকে হারিয়ে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। যা আগামী কোন নির্বাচনের ক্ষেত্রে মাইলফলক ও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যার না আছে টাকা। না আছে শক্তি। কোন প্রকার স্বার্থ ছাড়াই মানুষ শুধু ভালবেসে ভোট দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এখানে নৌকারও পরাজয় হয়েছে। এভাবেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে।
৬নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ ছদরুল ইসলাম ২৮১৯ ভোটের বিশাল ব্যবধানে বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম রানাকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানেও ব্যক্তি ইমেজ ও দলীয় পরিচয় প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। যে কারণে নৌকার সহজ বিজয় হয়েছে।
৭নং সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসান স্বতন্ত্র প্রার্থী মুকিতুর রহমানকে ৯৬২ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানেও ব্যক্তি ইমেজ ও দলীয় পরিচয় প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। যে কারণে নৌকার সহজ বিজয় হয়েছে।
৮নং আশারকান্দি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ূব খান ১৪৩২ ভোটের বিশাল ব্যবধানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুস ছত্তারকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানে ব্যক্তি ইমেজ ও মানুষের ভালবাসা প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। যে কারণে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।
৯নং পাইলগাঁও ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মখলুছ মিয়া মাত্র ৩৫১ ভোটের ব্যবধানে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক আহমদকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানেও নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।