এক হাজার ইউপিতে উৎসবমুখর ভোট

17

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সারাদেশে অনেকটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হয়েছে তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও ৯ পৌরসভার ভোট। তবে কিছু কেন্দ্রে ভোটপ্রদানে বাধা প্রদান, জাল ভোট ও ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ বিচ্ছিন্ন কিছু সহিংস ঘটনাও ঘটেছে। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল আশানুরূপ। পুরুষের তুলনায় নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি। আগের দুই ধাপের মতো তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে তেমন সহিংসতা হয়নি। খুলনায় ভোটের আগের রাতে সহিংসতায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার ১ জন নিহত হয়েছেন। নিহত বাবুল শিকদারের (৪০) বাড়ি তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কুলাপাটগাতি।
সকাল ৮টায় ভোট শুরুর আগে থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ ভোট দেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে যান। দুপুরের দিকে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও বিকেলের দিকে আবার বাড়ে। অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রের আশপাশে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। কেউ ভোট দিতে আসছেন, আবার কেউ ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আবার কেউ দূরে দাঁড়িয়ে নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। এই ছিল দিনভর ভোট কেন্দ্রের আশপাশের দৃশ্য। স্থানীয় সরকারের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচন হওয়ায় প্রতিটি গ্রামের পাড়া-মহল্লা থেকে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। বিশেষ করে বয়স্ক ভোটারদের বিশেষ ব্যবস্থায় কেন্দ্রে এনে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
ইউনিয়ন পরিষদ একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সবাই চান নিজ এলাকায় পছন্দের চেয়ারম্যান-মেম্বার নির্বাচিত করতে। তাই প্রার্থীদের মধ্যে কে কাকে পেছনে ফেলে বিজয়ী হবেন এ নিয়ে শুরু হয় নানা কৌশল। আর এ কৌশল প্রয়োগ করতে গিয়েই পরস্পরবিরোধী প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে মাঝেমধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। কে কার চেয়ে বেশি ভোট আদায় করে বিজয় নিশ্চিত করতে পারবেন এ নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা।
রবিবার ১২৩টি উপজেলার ১ হাজার ইউপি ও ৯ পৌরসভার নির্বাচন চলাকালে সহিংসতা এড়াতে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। আগের দুই ধাপের নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা হওয়ায় এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়। তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ২০টি রাজনৈতিক দল চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দেয়। স্বতন্ত্রসহ চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৫ হাজার ২২২ জন। প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪ হাজার ৪০৯ জন। এর মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১ হাজার ১০৫ জন ও সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচন করেন ৩৪ হাজার ৬৩২ জন।
এবারের নির্বাচনে ৩৮১ জন বিচারিক হাকিম মাঠে নামানো হয়। বিচারিক হাকিমগণ ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত মাঠে নিয়োজিত থাকবেন। তারা নির্বাচনী অপরাধসহ বিভিন্ন অপরাধ আমলে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ করছেন। নির্বাচনের আগেই চেয়ারম্যান পদে ১০০ জন, সংরক্ষিত সদস্য ১৩২ জন এবং সাধারণ সদস্য ৩৩৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
এর আগে ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর দুই দফায় প্রথম ধাপের ৩৬৯টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১১ নবেম্বর দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৮৩৩টি ইউপি নির্বাচন। আর তৃতীয় ধাপে রবিবার ১ হাজার ইউপিতে ভোট হয়। এছাড়া চতুর্থ ধাপে ৮৪০টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৬ ডিসেম্বর। আর ৫ম ধাপে ৭০৭ ইউপিতে ভোট হবে ৫ জানুয়ারি।
সহিংসতায় আহত ১ জনের মৃত্যু : খুলনায় নির্বাচনী সহিংসতায় একজন নিহত হয়েছেন। মৃত ব্যক্তি তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কুলাপাটগাতি গ্রামের বাবুল শিকদার (৪০)। নির্বাচনের আগের দিন শনিবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকালে ঢাকায় নেয়ার সময় তিনি মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জহুরুল আলম জানান, ঘটনার পরই অভিযান চালিয়ে হামলা ও হত্যায় জড়িত থাকা সন্দেহে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিহত বাবুল ওই ইউনিয়নের কুলাপাটগাতি গ্রামের সিরাজ শিকদারের ছেলে।
সুন্দরগঞ্জে ১টি কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাই, ১২ রাউন্ড গুলি : সুন্দরগঞ্জ ও পলাশবাড়ী উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের ভোট সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শুরু হলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বৌলজান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুপুর ১২টায় ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করলে পুলিশ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় পুলিশসহ ৫ জন আহত হয়। ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী মোঃ মহসিন আলীর সমর্থকরা ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ১২ রাউন্ড গুলি চালায়। এ কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ সময় পুলিশ কনস্টেবল মোমিনুল ও মাহবুব মিয়া আহত হন। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। পলাশবাড়ী উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের শিশুদহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী আশরাফ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। একই ইউনিয়নের মেরীরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে ভুয়া ব্যালট পেপার সরবরাহ ও জাল ভোট দেয়ার দায়ে দুই যুবককে এক বছর করে কারাদন্ড দিয়েছেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র। কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- রোস্তম আলী ও হারুন মিয়া। তারা গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের বাসিন্দা।
রামগঞ্জে ৩৮ জন গ্রেফতার : তৃতীয় ধাপে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ রবিবার সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হয়। তবে রামগঞ্জ লক্ষ্মীধারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয় অস্ত্রসহ।
সরাইলে জাল ভোটারকে ৬ মাসের সাজা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ইউপি নির্বাচনে জাল ভোট দেয়ার সময় আটক ১ জনকে ৬ মাসের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন (২৭) টিঘর গ্রামের হিরা মিয়ার ছেলে।
নেত্রকোনায় ব্যালট ছিনতাই : কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের বামনগাঁও মিশনারী স্কুল (প্রাইমারী) কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনায় বেলা ১টার সময় ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
চার প্রজন্মের মুরব্বি আছিয়া খাতুন ভোট দিলেন : বৃদ্ধ আছিয়া খাতুন। প্রবীণ এই নারীর বয়স জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী ১০০ বছর। তবে সন্তানদের দাবি তাদের মায়ের বয়স ১১৬ এর কোটায়। তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়েসহ ৮ সন্তানের এই জননীর এখন ৩৪ জন নাতি-নাতনি, পুতি পুতনি ও পুতি পুতনির ঘরেও সন্তান পেয়েছেন। চার পুরুষের সংসার জীবনে তার স্বামী মোহাম্মদ আলী মারা গেছেন প্রায় ১৮ বছর আগে। শুধু স্বামী নয়, বৃদ্ধ আছিয়া হারিয়েছেন তার বড় ছেলে ও মেয়েকেও। তিনিও কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।
পঞ্চগড়ে ছুরিকাঘাতে নৌকা সমর্থিত দুজন কর্মী আহত : পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় লাঙ্গল সমর্থিত কর্মীর ছুরিকাঘাতে নৌকা সমর্থিত দুই কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মেহেদী হাসান রুবেল (২৫) নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে ইউনিয়নের দলুয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- ওই এলাকার শাজাহান আলীর ছেলে সাগর ইসলাম (১৯) এবং মন্তাজ আলীর ছেলে লায়ন হোসেন (২২)। আটক মেহেদী হাসান রুবেল একই ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকার ফারাজুল ইসলামের ছেলে।
বরিশালে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করায় আটক ৯ : তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রবিবার দুপুরে আচরণবিধি ভঙ্গ করার অযোগে জেলার মুলাদী ও বাবুগঞ্জে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
শেরপুরে পৌর মেয়রের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিত : শেরপুরের নকলা উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ও আজকের পত্রিকা প্রতিনিধি তরুণ সাংবাদিক জুবাইদুল ইসলাম। রবিবার দুপুরে উপজেলার গৌরদ্বার ইউনিয়নের পাইস্কা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের পাশের রাস্তায় ওই হামলার ঘটনা ঘটান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন ও তার সহযোগীরা। পরে ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং পৌর মেয়র লিটনের শাস্তির দাবিতে সাংবাদিকরা ওই কেন্দ্রের পাশে ঢাকা-শেরপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
কুমিল্লায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিশকে কুপিয়ে জখম : কুমিল্লায় ভোটগ্রহণ চলাকালে কয়েকটি কেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং অফিসারসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। জেলার হোমনা, দাউদকান্দি ও বরুড়া উপজেলায় ৩০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া জেলার দাউদকান্দি উপজেলার জিংলাতলী ইউনিয়নের জিংলাতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ওমর ফারুক মিয়াজীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সহিংসতার কারণে বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের ঢেউয়াতলী, চিতড্ডা ইউনিয়নের ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খোশবাশ উত্তর ইউনিয়নের আদমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার জানান, ঢেউয়াতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট চলাকালে বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন সন্ত্রাসী কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করলে প্রিসাইডিং অফিসার গোলাম সারোয়ার ভূঁইয়া ও এসআই আবু হানিফ বাধা দেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা প্রিসাইডিং অফিসারকে ছুরিকাঘাত ও পুলিশ কর্মকর্তার কোমরে রাম দা দিয়ে কোপ দেয়। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তার পিস্তলটি সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নেয়ার পর কেন্দ্রের পাশে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার পর উদ্ধার করা হয়। আহত প্রিসাইডিং অফিসারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পুলিশ কর্মকর্তা আবু হানিফকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে দাউদকান্দি উপজেলার সদর উত্তর ইউনিয়নের ভাজরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ভোট কেন্দ্রের বাইরে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা।
উৎসবমুখর পরিবেশে কক্সবাজারে নির্বাচন : কক্সবাজার পৌরসভার একটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচনসহ চকরিয়া ও পেকুয়ায় ১৬টি ইউপি নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে মাঠে ছিল জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। চকরিয়ায় ১০ ইউপি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানো চেষ্টার অপরাধে ২১ জনকে আটক করা হলেও পরবর্তীতে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সকালে কক্সবাজার পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনের দুই কেন্দ্রে পুলিশের উপ-পরিদর্শকের বডিতে ক্যামেরা সেট করা অবস্থায় ডিউটি পালন করতে দেখা যায়। ছোট আকৃতির এই ক্যামেরা দায়িত্বরত দুজন পুলিশ সদস্যের অন্য কম্পলসারি এ্যাক্সেসরিজের মতো ইউনিফর্মের সঙ্গে বিশেষ পদ্ধতিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। ডিউটি শুরুর আগেই নিজেদের পোশাকে বিশেষায়িত ক্যামেরা স্থাপন করেন পুলিশ সদস্যরা। জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশে কাজের সচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও পুলিশিং কাজের আরও গতিশীলতায় বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার হয়। বডি ওর্ন ক্যামেরা ৩৬০ ডিগ্রী এ্যাঙ্গেলে ঘোরানো যাবে, ওয়াইফাই এবং থ্রিজি, ফোরজি নেটওয়ার্ক ও জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি যে কোন স্থানে বসেই সবকিছু তদারকি করা যাবে। পুলিশের এই ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ ভ্রাম্যমাণ সিসিটিভি তাৎক্ষণিক কোন ঘটনা চোখ এড়িয়ে গেলেও এই ক্যামেরা সবকিছু রেকর্ড করে রাখে।
নরসিংদীতে সংঘর্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০ : বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে সহিংস ঘটনার মধ্য দিয়ে নরসিংদী সদর ও রায়পুরা উপজেলার ২২ ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন চলাকালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।