প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে স্বচ্ছতা

6

দেড় বছর পর সংবাদ সম্মেলন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দেড় বছর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে পারেননি, যা তিনি পছন্দ করেন। এজন্য আক্ষেপও করেছেন। বরাবরই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে ভালবাসেন। বিশেষ করে বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে কি কারণে এই সফর, কি কি কাজ হয়েছে কিংবা সফর কতটা সফল ইত্যাদি জাতির সামনে তুলে করার জন্যই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এই সুযোগে উঠে আসে পারিপার্শ্বিক ঘটনা প্রবাহ। সকল বিষয়ে তার এই স্বচ্ছতা সেই ‘৯৬ সাল থেকে। তিনি বিশ্বাস করেন, সংবাদ মাধ্যম হচ্ছে জাতির আয়না। তিনিও এই আয়নায় স্পষ্ট থাকতে চান। এজন্য ধৈর্য্য ধরে সাংবাদিকদের সকল প্রশ্নের জবাব দেন। এবারও দিয়েছেন। সোয়া দুই ঘণ্টার এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি জাতিসংঘে তার সকল কর্মসূচী উপস্থাপন ছাড়াও সাংবাদিকদের প্রশ্নে সমসাময়িক সকল বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জাতিসংঘে তার সকল কর্মসূচীর বর্ণনা করেন। তিনি জানান, জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনের মূল সভা এবং সাইড ইভেন্ট মিলিয়ে তিনি ১০টি সভা এবং ৮টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছেন। মূল অধিবেশনে সাধারণ বিতর্ক পর্বের উদ্বোধনী অধিবেশনেও যোগদান করেন। এবারের অধিবেশনে কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে ‘প্রত্যাশা’কে উপজীব্য করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল মহামারী থেকে টেকসই উত্তরণ। এছাড়াও টিকার সর্বজনীন প্রাপ্যতা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, নারীর ক্ষমতায়ন, বর্ণবাদ, এসডিজি, পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা হয়েছে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসডিজি অর্জনে সর্বোচ্চ সাফল্যের জন্য আমাকে যে পুরস্কার দেয়া হয়েছে আমি তা দেশের জনগণকে উৎসর্গ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সোয়া দুই ঘণ্টার এই সংবাদ সম্মেলনে গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকা সাংবাদিকরা প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য প্রশ্ন করেন। ধৈর্যের সঙ্গে স্বভাবসুলভ হাসিমাখা মুখে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। করোনার কারণে সব সাংবাদিককে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন না করতে পারায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা সক্ষম হয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই সবাইকে নিয়ে বসে কথা বলতে পারব। জাতীয় সংসদের পর রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ খ্যাত সংবাদ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর এই জবাদিহি গণতন্ত্রের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধাবোধই প্রকাশ করে না, সকল রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে তার স্বচ্ছতাও প্রমাণ করে।